Posts

Showing posts from January, 2017
আগে মানুষ বিয়ে করতো দুজন মিলে সংসার গড়তে, এখন মানুষ বিয়ে করে কাপল পিক তুলতে। . আগে মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠান করতো আত্মীয় স্বজনদের একসাথ করে আপ্যায়ন করতে, এখন মানুষ বিয়ে করে আত্মীয় স্বজনদের সাথে একসাথে বিভিন্ন পোজে ছবি তুলতে। . আগে মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠানে আসতো নব দম্পতিদের আশীর্বাদ দিতে, এখন মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠানে আসে সেলফি তুলতে আর নামকরা জায়গায় হলে ফেবুকে চেকিন দিতে। . আগে মানুষ বিয়েতে সমালচনা করতো কে কি দিল, কে কি পড়লো, কে কি খাওয়াইলো এসব নিয়ে। এখন মানুষ বিয়েতে সমালচনা করে কে কত ভালো গিয়ারয়ালা ফটোগ্রাফার ভাড়া করলো, এই কালারের ড্রেস পড়াতে ছবি কেমন খারাপ আসবে, এমন স্টেজ কেন দিল ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো আসবে না এসব নিয়ে। . আগে মানুষ বিয়ের কেনাকাটা করতো কোনটায় সুন্দর লাগবে/মানাবে তা দেখে। এখন মানুষ বিয়ের কেনাকাটা করে কোনটা ক্যামেরায় ভালো আসবে তা দেখে। . মোট কথা এখন মানুষ বিয়ে করে প্রথমত ছবি তোলার জন্য, দ্বিতীয়ত ছবি তোলার জন্য, তৃতীয়ত ব্যাস্ত লাইফে সবাই এক ছুতায় একসাথ হয়ে এক জায়গায় ছবি তোলার জন্য এবং সর্বশেষ ও সবচেয়ে মেইন যে কারনে মানুষ বিয়ে করে তা হলো ছবি তোলার জন্য . তবে আগে এবং এখনো বিয়ে পড়ানো...
  মেয়েটা ফিসফিস করে আমাকে কিছু একটা বলতে চাইলো।  কিন্তু তার গলা থেকে কোন আওয়াজ বেরোচ্ছে না। প্রচন্ড ঠান্ডায় তার গলা বসে গেছে। ঐ মূহুর্তে দিনে তিন বেলা আইসক্রিম খাওয়া নিয়ে তাকে একটা বিশদ লেকচার দেয়া উচিত। কিন্তু তার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার কেন জানি মায়া লাগলো। জ্বর বড্ড খারাপ জিনিস। তীব্র সুন্দর একজোড়া চোখও জ্বরের সাথে যুদ্ধ করে হার মেনে যায়। সেই চোখজোড়াতে ভর করে রাজ্যের ক্লান্তি। মেয়েটা চোখ বন্ধ করলো। হু হু করে তার জ্বর বাড়ছে। আমি একটা ভেজা রুমাল হাতে নিয়ে মেয়েটার কপালে রাখলাম। মেয়েটা জানে না, রুমালের রং নীল  জানলে সে খুব রেগে যেতো। নীল রং মেয়েটার পছন্দ না। সপ্তাহখানেক ধরেই প্রতিদিন ঘন্টাখানেক পর পর আমি মেয়েটার জ্বরের খোঁজ নিতাম। হয়তো সে বিরক্ত হতো, হয়তো হতো না! আমার অত কিছু ভাবার সময় ছিল না। আমার ভালো লাগতো। খোঁজ না নিতে পারলে আমার কষ্ট হতো। আমি নিজের কষ্ট কমাতেই বোধ হয় ওর খোঁজ নিতাম। অনুভূতির বেলায় মানুষ খুবই স্বার্থপর। নিজের ভালোলাগার দিকেই সে দৌড়াতে থাকে। আমি ডাক্তার নই, কিন্তু আমি জানি, এই পৃথিবীতে সব রকম অসুস্থতার একটাই ঔষধ আছে। ঔষধের নাম ' CARE' গভীর রাতে ...
তোমায় যেদিন আমি প্রথম চুম্বনে অভিষিক্ত করেছিলাম, পুরো বাড়ি মেতে উঠেছিল সোল্লাসে! তোমার বাবা চাপড়ে দিয়েছিলেন আমার পিঠ, তোমার মা টিপে দিয়েছিলেন গাল, আর দাদু টেনে দিয়েছিলেন কান। আমার বাবা-মা সবাইকে ডেকে সানন্দে বলেছিলেন— দ্যাখো, দ্যাখো— আমাদের ছেলে কত্ত বড় হয়েছে! সেদিন— আড়াই বছরের আমি দেড়বছরের তোমাকে চুমু খেয়ে বড় না হয়েও অনেক বড় হয়েছিলাম; কুড়িয়েছিলাম বহুদলীয় বাহবা, পেয়েছিলাম বীরোচিত অভিনন্দন! কুড়ি বছর পরে— আমি যখন সত্যি বড় হয়েছি, চুম্বন যখন সময়ের দাবি; তখন চাইলেই আমি তোমার চৌকাঠ ডিঙোতে পারি না, তোমাকে অভিষিক্ত করতে পারি না দ্বিতীয় চুম্বনে! তবে কি আড়াই বছরের আমিই শক্তিমান ছিলাম বাইশ বছরের আমার চেয়ে? যখন চাইলেই চুমু খেতে পারতাম যে-কারো ঠোঁটে, থুথু দিতে পারতাম যে-কারো মুখে! তবে, চলো— আবারও আমরা দেড় আর আড়াই হয়ে যাই!
লাল টুকটুকে রঙের একটা আইসক্রিম। নাম ছিল মধু আইসক্রিম। তখন সেই আইক্রিমের দাম ছিল মাত্র দশ টাকা। আমি স্কুলের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখতাম, ছেলেরা সেই আইসক্রিম খাচ্ছে। আমার পকেটে তখন দশ টাকা ছিল না। আজ পকেট ভর্তি আট আনা। শুধু সেই কাঠিওয়ালা মধু আইসক্রিম নেই। সেই শৈশব নেই। তবে শৈশবের সেই ভয়ংকর কষ্টটা আছে। আজও আমি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমাতে যাই। ঘুমের মধ্যে কাঁদি। শৈশবের সেই লাল আইসক্রিমের জন্য। কিছু কিছু কষ্ট মানুষের কোনোদিন যায় না। কিছু বেদনা মানুষ কখনো ভুলতে পারে না। আমি যদি সব কিছুর বিনিময়ে সেই দশ টাকা  বিহীন কষ্টের শৈশবটা ফিরে পেতাম, আমার কোনো আপত্তি থাকতো না। জীবন এমন এক যাত্রা, যেখানে এক ইঞ্চি পেছনে যাবার উপায় নেই। জীবন কেবল সামনের দিকে বয়ে চলে।আর এটাই জীবনের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি।