Posts

Showing posts from December, 2017

জনজাল

একটি দেশে যেকোনো শক্তিকে টিকে থাকতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন জনসমর্থন। জনগণের একটি অংশের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার যেমন টিকতে পারে না, তেমনি টিকতে পারে না এমনকি কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীও। পৃথিবীর যেকোনো জঙ্গিসংগঠনের ঠিকুজি খুঁজলে দেখা যাবে সংগঠনটির ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের জনগণের একাংশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন আছে, নিদেনপক্ষে 'সফট কর্নার' আছে। স্বীকার করা হোক বা না হোক, তিক্ত সত্য হচ্ছে জঙ্গিদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশের নীরব সমর্থন আছে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের এই নীরবতাকে পুঁজি করেই জঙ্গিরা বাংলাদেশকে বাংলাস্তানে পরিণত করার সুযোগ পেল। বাংলাদেশ একদিন বাংলাস্তানে পরিণত হবে বলে যে আশঙ্কাটি শুভবুদ্ধি-সম্পন্ন মানুষেরা করে আসছিলেন এত দিন ধরে, সেই আশঙ্কা সত্য হয়েছে এবং গত পহেলা জুলাই রাত নয়টা থেকে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাস্তানে পা রেখেছে। 'বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো' বাগধারাটি মুসলমান বাঙালিদের জন্যই বোধহয় রচিত হয়েছিল। তারা জানেনই না কখন প্রতিবাদ করতে হবে, কখন নীরব থাকতে হবে। মুসলমান বাঙালিদের অ-সময়োচিত নীরবতাই বাংলাদেশের বাংলাস্তান হওয়ার পেছনে বহুলাংশে দায়ী। আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদ...

বাংলার কীর্তিকলাপ

আমার কাছে এক শিক্ষার্থী এসেছে। সে কোনো এক বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছে। তার গবেষণার বিষয় সোশাল মিডিয়া। আমার কাছে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের সোশাল মিডিয়া সম্পর্কে সে কিছু জানতে চায়। আমি তাকে খুবই যত্ন করে চা খাওয়ালাম। বাংলাদেশের চা। সে খুবই আগ্রহ নিয়ে চা খেলো। তার খাওয়া শেষ হওয়ার পর, আমি গলায় দুই লিটার বিনয় ঢেলে বললাম, বাংলাদেশের সোশাল মিডিয়া নিয়ে আমি কিছুই জানি না। সে খানিকক্ষণ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো। তারপর বলল, কিন্তু আমি তো শুনেছি তুমি ফেসবুকে খুব একটিভ। – ঠিকই শুনেছো। আমি যতক্ষণ সময় ফেসবুকে থাকি, ততক্ষণ সময় আমি আমি অফিস, সংসার, বাথরুম এমনকি বিছানায়ও থাকি না। আমার একটা ছোট্ট প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ আছে। যখন শাওয়ার নিই, তখনও আমি ফেসবুকে চোখ রাখি। সেই ছোট্ট প্লাস্টিকের ব্যাগে আমার মোবাইল থাকে। পানিতে যাতে মোবাইল ভিজে না যায় এজন্য এই ব্যবস্থা। এই কথা শুনে তরুণ গবেষকটির চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। সে বলল, আমি তোমার এই ফেসবুক ব্যবহারের অভিজ্ঞতাটাই শুনতে চাই। এবার আমি গলায় দুই কেজি পরিমাণ কনক্রিট ঢেলে বললাম, সেই অভিজ্ঞতা আমার পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। স্যরি। তুমি এবার আসো। তোমার সাথে...

প্রিয় আনিসুল হক!

আনিসুল হকের একটি বিশেষ প্রতিভা নিয়ে কাউকে কথা বলতে দেখলাম না। এই প্রতিভাকে বলে, কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট। দুইটা দল ঝগড়া করছে, তাদেরকে মিলমিশ করিয়ে দিতে তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। এই রকম দুটি বড় ঘটনা দেখার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছিলো। ব্যান্ডসঙ্গীত তখন সবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এই নতুন ধারার গান শুনে তরুণরা আত্নহারা। কিন্তু প্রবীণের মাথা ঝাঁকিয়ে বলছেন, গেলো গেলো, সব গেলো। আনিসুল একটি অভাবনীয় ব্যাপার ঘটালেন। টিভিতে একটি গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। যারা ইস্ত্রি করা পাঞ্জাবি পড়ে, পবিত্র শান্তিনিকেতনীয় ভাব নিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতসহ গেয়ে থাকেন, তাদেরকে তিনি ডাকলেন। আরেকদল আমন্ত্রণ পেলো। ঝাকড়া চুলের সানগ্লাস পড়া ব্যান্ডের গাতক-গাতিকাবৃন্দ। দুই দল পাশাপাশি বসে গানবাজনা করলো। মজার যেটা ব্যাপার ঘটলো, রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পীরা গাইলেন ব্যান্ডের গান। আর ব্যান্ডের ছোকড়ারা হারমোনিয়াম বাজিয়ে গাইলো রবীন্দ্রসঙ্গীত। এই আয়োজনের নাম দেয়া হলো- জলসা। অভূতপূর্ব এই অনুষ্ঠান দেখার পর দুই দলই খুবই সহজে বুঝে ফেললো, সুরের কোনো দল নেই। অহেতুক দলাদলি ব্যাপারটা কেবল মানবজাতির জন্য প্রযোজ্য। আরেকটি কান্ড তিনি করেছিলেন। তখন আওয়া...