"মিম আর আলিফের গল্প।"
মিমকে প্রথমবার দেখে আলিফের মটেও পছন্দ হয়নি। মনে হয়েছিল একোন ক্ষ্যাত চলে এসেছে। আলিফের সাথে যারা প্রথমবার দেখা করতে আসে তারা একটা জিনিস সবসময় খেয়াল রাখে, তা হলো তাদের লুকস। কিন্তু মিম না দেখতে ভালো না, না তার লুকস ভালো। কথোপকথনের একটা পর্যায় আলিফ আবিস্কার করে মিম এর চোখটা কেমন যেনো ছলছল করছে। মিম কিছু একটা খুঁজছে, কাউকে খুঁজছে। আলিফের আগ্রহ হলেও তেমন একটা পাত্তা দিলো না।
আড্ডা শেষে যখন সবাই বাসার দিক যাচ্ছে তখন মিমের কিছু কথা শুনে আলিফ অবাক হলে মিমকে পছন্দ করা শুরু করল। এতো সস্ছলতার সাথে, এতো সততার সাথে আজ পর্যন্ত কাউকে সে কথা বলতে শোনেনি।
অপার ভালোলাগার এক দমকা হাওয়া আলিফের হৃদয়কে চিড়ে দিয়ে গেলো। মিমকে ছেড়ে আসাটাই আলিফের জন্য যাবৎ জীবন কারাদন্ড লাগছিল। মিমের অটো থেকে নেমে আলিফ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো রাস্তায়। বাসা থেকে বারংবার কল আসছে, মিমের বলা সেই কথাগুলো আলিফের কানে তালা লাগিয়ে দেয়। ফোনের রিং, রিক্সার বেল, গাড়ির হর্ণ, অটো মাহিন্ডোওলার ডাক কিছুই না।
কিছুক্ষন পর হুশ আসলে নিজেকে গুছিয়ে বাসায় চলে আসি, স্যারদের কাছে পড়ার ভারটা চুকিয়ে ঘরের আলোটা ধিমে করে ভাবা শুরু করলাম মিম দেখতে কেমন ছিল। ছবিটা স্পর্ট না। আবার দেখা করতে হবে। কি করা যায়? কৌতুহলি মন বাহানা খোজা শুরু করল। ভালো একটা বাহানা খুজে "হালকাট জাবানি" ওরফে মালুকে ফোন দিয়ে একদম সদ্য বানানো রসে ভেজা বাহানাটা পরিবেশন করলাম। খানিকটা সন্ধেহ হলেও বাহানা আর তার রস ঠিকই সন্ধেহ কাটাতে ঠিকই সক্ষম হলো। মিমের সাথে দেখা করার জন্য আলিফের নতুন নতুন বাহানা, শুধুকি নতুন অদ্ভুতও বটে। সময় যাচ্ছে দিন কাটছে। সম্পর্কের পরিপক্যতা আসছে কথা না বলে একজন আরেকজনের কথা বুঝে। বন্ধুত্বের সম্পর্কে মিম আর আলিফের সময়কাল এইতো মাসচারেক হলো।
ঈদের সময় অলিফের মনে হলো মিমকে কিছু একটা দেওয়া যাক। কি দেওয়া যায়? প্রশ্নের উত্তর খুজতে আলিফের জীবন কেমন করে যেনো শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবুও সে খুজতে থাকে কি দেওয়া যায়। মিমকে ভাবতে ভাবে একটু ঝিমিয়ে পড়লাম। সপ্নে মিমকে শাড়িতে দেখে হাত বাড়িয়ে ছুতে গিয়েই খাট থেকে হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। মাথা ডলতে ডলতে আম্মুর যাড়ি শুনলাম আগে বাস্তবতায় দেখতে এখন সপ্নে দেখা শুরু করলি না কি?
আলিফের মুচকি হাসিতে তার আম্মুর বুঝতে বিন্দুমাত্র বাকি থাকলো না, যে ছেলে প্রেমে পড়েছে।
শাড়ি কেনার দিন হঠাৎ বৃষ্টি। ভিজে পুড়ে যখন জলিল টাওয়ারের নিচে আসলাম সকলের মাঝে মিমকে বড্ডো আলাদা লাগছিলো। আমার আশ্চর্যের সীমা পরিসীমা অতিক্রম করে মুখ খুলে আ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। মিমের মুখ যেনো আলোতে জ্বলজ্বল করছে। ধীরগতিতে তার চুল উড়ছে, তার পিছনে বৃষ্টি পড়ছে, মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকানোর আলোতে জেনো বিষ্ময়ের নতুন মাত্রা যোগ করছে। সে এক অভুতোপূর্ণ ঘটনা যা আলিফ তার সারাটা জীবন মনে রাখবে। মনে রাখার মতোই একটাই ঘটনা। শাড়ির দোকানে কোনো শাড়িই পছন্দ হচ্ছে না। সব কেমন যেনো রঙহীন কাপড়। মিমের উপর সবকিছুই কেমন যেনো অর্থহীন লাগছে। সেই সকাল থেকে তাকে সাথে নিয়ে শাড়ি খুজছি কোনো কিছুই পছন্দ হচ্ছে না। কেমন করে হবে মিম অনন্যা আর তার জন্য দরকার এক অনন্য শাড়ি। সারাটাদিন তার মুগ্ধোতায় গেলো। বেলাশেষে একটা শাড়ি পছন্দ হলো। শাড়িটা মিমের উপর ছুতেই মনে হলো শাড়িটা মিমকে আপন করে নিয়েছে। সে আরেক মুগ্ধোকর দৃশ্য। এতোদিনে মিমকে এই প্রথম এতো সুন্দর লাগছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তবে বলতে হলে বলতে হবে পরী। পরী রাজ্যের রানী।
Comments
Post a Comment