এই ভর দুপুরে একজন আমাকে মুখের উপর ব্লক করে দিলেন।
তিনি একটা জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসের বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী। ঢাকার রাস্তার জলাবদ্ধতা। তার ভাষ্য, আমরা পলিথিন রাস্তায় ফেলি বলেই আজকে এই দশা। আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। নিউইয়র্ক, লন্ডন, টোকিও'র মেয়ররাও এই শহরের কিছু করতে পারবে না। আমাদের উচিত মেয়রদ্বয়ের প্রতি আস্থা রাখা, সময়মতো পৌরকর পরিশোধ করা এবং উন্নয়নের জয়যাত্রায় সামিল হওয়া।
দুই ঘন্টায় বিশ হাজার লাইক।
আমি তাকে ইনবক্সে প্রশ্ন করলাম, ভাইয়া ব্যস্ত?
- আরে কিসের ব্যস্ত। আমি তো জনগণের জন্যই। বলুন কি করতে পারি আপনার জন্য।
আমি হালকার উপর বাড়ি মেরে বললাম, নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন নাকি?
উনি দরাজ গলায় বললেন, আমার তো ইচ্ছে নেই রে ভাই। এলাকার মানুষের দাবী। ভালোবাসার দাবী তো আর ফেলা যায় না। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন নেত্রী। দোয়া রাইখেন। দোয়াটাই আসল।
- জ্বী ভাইয়া। অবশ্যই দোয়া করবো। আপনার কথা শুনে কান্না পাচ্ছে। কান্নাকাটিতে যদি এক ইঞ্চি পানি বেড়ে যায়, এই ভয়ে কাঁদছি না। যে জলাবদ্ধতা চারিদিকে।
উনি সতর্ক হয়ে উত্তর দিলেন, আপনি কি আমার সাথে ফাজলামি করছেন? রসিকতা বাদ দিয়ে যা বলার দ্রুত বলেন।
এরপর আমি টুক করে মূল প্রশ্নে চলে গেলাম। আচ্ছা, এখন থেকে পলিথিন রাস্তায় ফেলবো না। পলিথিন ধুয়ে, ইস্ত্রি করে, সুন্দর মতো ভাঁজ করে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসবো। কিন্তু এই ডাস্টবিনের পলিথিনগুলোর কি হবে?
উনি সরলভাবে উত্তর দিলেন, সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এসে এই পলিথিনগুলো নিয়ে যাবে।
আমি আরও সরল গলায় তাকে বললাম, কোথায় নিয়ে যাবে?
উনি ক্ষেপে গিয়ে বললেন, এজন্য নির্ধারিত জায়গা আছে। সিটি কর্পোরেশনকে কি ভাবেন? আপনার মতো ফাতরা নাকি তারা। তাদের জায়গা আছে। সেখানে তারা ময়লা নিয়ে যাবে। আপনার মাথায় ফেলবে না। বুঝেছেন?
আমি অত্যন্ত আনন্দিত গলায় বললাম, ওহ তাই ভাইয়া। থ্যাংক ইউ সো মাচ। কিন্তু আমার আরেকটি প্রশ্ন ছিলো।
- তাড়াতাড়ি বলেন । আমার তো আরও কাজ আছে। আপনার সাথে খাজুরা আলাপের সময় নেই।
আমি তাকে আশ্বস্ত করলাম। এটাই আমার শেষ প্রশ্ন। সময় যেহেতু শেষ, কাজেই একদমে কয়েকটা প্রশ্ন করে ফেললাম:
১. সিটি কর্পোরেশন কি এই পলিথিনগুলোকে আরও হাজার প্রকার ময়লা থেকে আলাদা করে রিসাইকেল করবে?
২. এই রকম পলিথিন রিসাইকেল করার কোনো পদ্ধতি কি তাদের আছে?
৩. এই অমর, অক্ষয় পলিথিনগুলো শেষ পর্যন্ত কোথায় যায়?
৪.কোথায় তাদের ফেলা হয়?
৫. নাকি বিদেশে রপ্তানি করা হয়?
৬. অনন্তকাল ধরে যেসব সুনাগরিক কোটি কোটি পলিথিন ডাস্টবিনে ফেলেছেন, সেই সব অসহায় পলিথিনগুলো আজ কোথায় আছে?
৭.কেমন আছে?
৮. জলাবদ্ধতায় তাদের ভূমিকা কি?
উনি সাথে সাথে আমাকে ব্লক করে দিলেন।
প্রিয় ফ্রান্স, পলিথিন জাতীয় সম্পদ। একে রাস্তায় ফেলবেন না। এমনকি ডাস্টবিনেও না। বরং আপনার ঘিলু এই পলিথিনে মুড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর এভাবে স্ট্যাটাস লিখুন:
ঐহিত্যবাহী ঢাকা শহরের লোক সংখ্যা দুই কোটি। এই দুই কোটি মানুষ যদি দিনে ছয়বার করে মূত্রত্যাগ করে তাহলে দিনে বারো কোটি বার জলবিয়োগ হয়। এই বিপুল পরিমাণ পানি কোথায় যাবে? জলাবদ্ধতা কেন হবে না বলুন তো? কেবল মেয়রদের সমালোচনা করলেই হবে? আমাদের কি কোনো দায় নেই? একদিন না মুতলে কি হয়? আসুন, পানি কম খাই। বাথরুমে কম যাই। দেশ আমাদের সবার। দায়িত্বও সবার। শুধু শুধু সমালোচনা না করে নিজেরা ভালো হই। প্রয়োজন ছাড়া পানি খাবেন না। পরিবারের সবাই একদিনে বাথরুমে যাবেন না। সবাই মিলে দেশ গড়ি।
লাইক নিশ্চিত। নমিনেশনও।
আপনাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ!!
তিনি একটা জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসের বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী। ঢাকার রাস্তার জলাবদ্ধতা। তার ভাষ্য, আমরা পলিথিন রাস্তায় ফেলি বলেই আজকে এই দশা। আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। নিউইয়র্ক, লন্ডন, টোকিও'র মেয়ররাও এই শহরের কিছু করতে পারবে না। আমাদের উচিত মেয়রদ্বয়ের প্রতি আস্থা রাখা, সময়মতো পৌরকর পরিশোধ করা এবং উন্নয়নের জয়যাত্রায় সামিল হওয়া।
দুই ঘন্টায় বিশ হাজার লাইক।
আমি তাকে ইনবক্সে প্রশ্ন করলাম, ভাইয়া ব্যস্ত?
- আরে কিসের ব্যস্ত। আমি তো জনগণের জন্যই। বলুন কি করতে পারি আপনার জন্য।
আমি হালকার উপর বাড়ি মেরে বললাম, নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন নাকি?
উনি দরাজ গলায় বললেন, আমার তো ইচ্ছে নেই রে ভাই। এলাকার মানুষের দাবী। ভালোবাসার দাবী তো আর ফেলা যায় না। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন নেত্রী। দোয়া রাইখেন। দোয়াটাই আসল।
- জ্বী ভাইয়া। অবশ্যই দোয়া করবো। আপনার কথা শুনে কান্না পাচ্ছে। কান্নাকাটিতে যদি এক ইঞ্চি পানি বেড়ে যায়, এই ভয়ে কাঁদছি না। যে জলাবদ্ধতা চারিদিকে।
উনি সতর্ক হয়ে উত্তর দিলেন, আপনি কি আমার সাথে ফাজলামি করছেন? রসিকতা বাদ দিয়ে যা বলার দ্রুত বলেন।
এরপর আমি টুক করে মূল প্রশ্নে চলে গেলাম। আচ্ছা, এখন থেকে পলিথিন রাস্তায় ফেলবো না। পলিথিন ধুয়ে, ইস্ত্রি করে, সুন্দর মতো ভাঁজ করে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসবো। কিন্তু এই ডাস্টবিনের পলিথিনগুলোর কি হবে?
উনি সরলভাবে উত্তর দিলেন, সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি এসে এই পলিথিনগুলো নিয়ে যাবে।
আমি আরও সরল গলায় তাকে বললাম, কোথায় নিয়ে যাবে?
উনি ক্ষেপে গিয়ে বললেন, এজন্য নির্ধারিত জায়গা আছে। সিটি কর্পোরেশনকে কি ভাবেন? আপনার মতো ফাতরা নাকি তারা। তাদের জায়গা আছে। সেখানে তারা ময়লা নিয়ে যাবে। আপনার মাথায় ফেলবে না। বুঝেছেন?
আমি অত্যন্ত আনন্দিত গলায় বললাম, ওহ তাই ভাইয়া। থ্যাংক ইউ সো মাচ। কিন্তু আমার আরেকটি প্রশ্ন ছিলো।
- তাড়াতাড়ি বলেন । আমার তো আরও কাজ আছে। আপনার সাথে খাজুরা আলাপের সময় নেই।
আমি তাকে আশ্বস্ত করলাম। এটাই আমার শেষ প্রশ্ন। সময় যেহেতু শেষ, কাজেই একদমে কয়েকটা প্রশ্ন করে ফেললাম:
১. সিটি কর্পোরেশন কি এই পলিথিনগুলোকে আরও হাজার প্রকার ময়লা থেকে আলাদা করে রিসাইকেল করবে?
২. এই রকম পলিথিন রিসাইকেল করার কোনো পদ্ধতি কি তাদের আছে?
৩. এই অমর, অক্ষয় পলিথিনগুলো শেষ পর্যন্ত কোথায় যায়?
৪.কোথায় তাদের ফেলা হয়?
৫. নাকি বিদেশে রপ্তানি করা হয়?
৬. অনন্তকাল ধরে যেসব সুনাগরিক কোটি কোটি পলিথিন ডাস্টবিনে ফেলেছেন, সেই সব অসহায় পলিথিনগুলো আজ কোথায় আছে?
৭.কেমন আছে?
৮. জলাবদ্ধতায় তাদের ভূমিকা কি?
উনি সাথে সাথে আমাকে ব্লক করে দিলেন।
প্রিয় ফ্রান্স, পলিথিন জাতীয় সম্পদ। একে রাস্তায় ফেলবেন না। এমনকি ডাস্টবিনেও না। বরং আপনার ঘিলু এই পলিথিনে মুড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর এভাবে স্ট্যাটাস লিখুন:
ঐহিত্যবাহী ঢাকা শহরের লোক সংখ্যা দুই কোটি। এই দুই কোটি মানুষ যদি দিনে ছয়বার করে মূত্রত্যাগ করে তাহলে দিনে বারো কোটি বার জলবিয়োগ হয়। এই বিপুল পরিমাণ পানি কোথায় যাবে? জলাবদ্ধতা কেন হবে না বলুন তো? কেবল মেয়রদের সমালোচনা করলেই হবে? আমাদের কি কোনো দায় নেই? একদিন না মুতলে কি হয়? আসুন, পানি কম খাই। বাথরুমে কম যাই। দেশ আমাদের সবার। দায়িত্বও সবার। শুধু শুধু সমালোচনা না করে নিজেরা ভালো হই। প্রয়োজন ছাড়া পানি খাবেন না। পরিবারের সবাই একদিনে বাথরুমে যাবেন না। সবাই মিলে দেশ গড়ি।
লাইক নিশ্চিত। নমিনেশনও।
আপনাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ!!
Comments
Post a Comment