Posts

Showing posts from 2018

বিশ্বাস এবং বিজ্ঞানের ধন্দ !

খুলনা জিলা স্কুলে পড়ার সময় আমাদের বাংলার স্যার ছিলেন গিয়াস আতাম চৌধুরি। তিনি ক্লাস লেকচারে বিশ্বাস এবং বিজ্ঞানের পার্থক্য বুঝাচ্ছিলেন। ক্লিনটন এবং হিলারির একমাত্র মেয়ের নাম চেলসি। স্যার বললেন, ক্লিনটন যদি বলে চেলসি তাদের দুইজনের মেয়ে, তাহলে এটা বিশ্বাস। আর হিলারি যদি বলেন, চেলসি হচ্ছে ক্লিনটন এবং হিলারির মেয়ে, তাহলে এটা বিজ্ঞান। এরপর স্যার একটু দম নিয়ে মুচকি হেসে বললেন, বিজ্ঞান মেয়েদের দখলে। ছেলেদের আছে বিশ্বাস। স্যারকে হাই টেন। স্কুলটা ছেড়েছি দুই বছর হলো তবুও হাজারো গল্প বাসাবেঁধে আছে এই বুকে। "জীবনটা খুব সুন্দর কিন্তু 'স্কুল জীবনটা' তার থেকেও সুন্দর"!!!!

“উনার ৩ টা কাপড় আছে আমার কাছে”

৬ মাস আগে প্যান্ট বানাতে গেলাম, দর্জি মাপ নিচ্ছে আর আমি এদিক ওদিক তাকাচ্ছি দেখলাম দর্জির দোকানে একটা চমৎকার স্যুট ঝুলছে ফেব্রিক আর কাটিং দেখেই দেখেই বুঝা যায় খুব রুচিসম্মত কোন মানুষের স্যুট হবে গতসপ্তাহেও গেলাম দর্জির দোকানে, দেখলাম এখনও সেটা ঝুলছে আমি বললাম “এটা এতদিন থেকে এখানে কেন?’ ‘যে অর্ডার দিসিলো, সে ডেলিভারি নেয় নাই’ “কতো দিন হলো?” ‘২ বছর’ “আপনারা ফোন করেন নাই?” ‘ফোন বন্ধ’ “ঠিকানা নেই?” ‘দর্জির দোকানে কেউ বাসার ঠিকানা দেয় নাকি?’ মনটা কেন জানি খুব খারাপ হয়ে গেলো এখনও প্রায়ই যাই দর্জির দোকানে সেই সুটটা কেউ নিতে এসেছে নাকি জানতে টেইলর মাস্টার আমার প্রতি বিরক্ত, ‘হে যদি আপনার পরিচিত হয় নিয়ে জান প্লীজ সুটটা, বেহুদা উনার ৩ টা স্যুট হেঙ্গারের জায়গা দখল করে আছে’ “উনার ৩ টা স্যুট?” ‘হ্যাঁ’ “কোন ৩ টা?” ‘পাশাপাশি ৩ টা’ আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি স্যুট ৩ টার দিকে... একটা ডিপ এশ, একটা ডার্ক কফি কালারের আরেকটা নেভি ব্লূর মধ্যে ব্ল্যাক স্ট্রাইপ্স। কোনটায় টু বাটন, কোনটায় থ্রি “আমি দর্জিকে বললাম উনার নম্বরটা দিবেন আমাকে? আমি খুঁজে বের করব” সেই নম্বরে আমি প্রতিদিন ফোন করি, মো...

কুত্তা লাগল কেন পিছে !

কোরবানীর দিন কুত্তা লাগল কেন পিছনে ???  কোনো এক সালের ঘটনা .... কোরবানী ঈদের সকালে .... গরু জবাই নিয়ে কোস্তাকোস্তি চলছে .... আমাদের গরু জবাই করার আয়োজন চলছে .... আমি সাদা একটা পান্জাবী পায়জামা পড়ে ভীষন ভাবের সাথে আলগা পন্ডিতি করছি .... রাস্তায় তখন পাঁচ ছয়টা কুকুর ঘুরাঘুরি করছে .... আম্মু সহ আমার সব চাচীরা চাচতো বোনরা বারান্দায় দাড়িয়ে আছে .... হঠাৎ সামনের বাড়ীর পাগলা গরুটা দড়ি ছিড়ে দিল দৌড় .... যাওয়ার পথে গরুটা আমাকে পিঠ বরাবর পেছন থেকে গুঁতা দিল .... ধাক্কাটা খেয়েই কালো রঙ্গের একটা কুকুরের গায়ের উপর যেয়ে পড়লাম .... কুকুরটা অদ্ভুত রকমের একটা শব্দ করে উঠলো .... আমি কোন কিছু না বুঝেই এক দৌড়ে বাসার ভেতর ঢুকে যাই .... কুকুরটা বাড়ীর সামনে দিয়েই ঘুরঘুর করছে .... মনে হচ্ছে কুকুরটা আমার অপেক্ষায় আছে .... ব্যাথা পাইনি ভীষন ভয় পেয়েছি .... আমাদের কোরবানী দেয়া শেষ হলো, আমি বারান্দা দিয়ে দেখলাম ..... মাংস কাটা শেষ হলো, আমি বারান্দা দিয়ে দেখলাম .... রুমের ভেতরে যেয়ে একটা ঘুম দিলাম .... ঘুম থেকে উঠে যখন বারান্দায় এলাম, দেখি কুকুরটা তখনও আমার বাসার গেটের সামনে বসে আছে .... কাউকে কিছু বললাম না .....

ফেরা-০১

আমাদের বাসার সবাই পাগল। আমার বাবা-মা পাগল। দাদা এবং দিদা পাগল। এমনকি আমাদের বাসায় যে কাজের বুয়া কাজ করে তার নাম নয়নের মা। তার মাথায়ও ভীষণ গোলমাল আছে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কোন পাগলের কথা দিয়ে গল্প শুরু করব? সবচেয়ে বড় সিনিয়র পাগলের কথাই আগে বলি। তারপর বয়সের ক্রম অনুযায়ী আগানো যাবে। কেমন? আমার দাদা মোবারক আলী এই বয়সের প্রবীণতম মানুষ। উনার বয়স ৭৯। কয়েক বছর ধরে তিনি ঘটা করে নিজের জন্মদিন পালন করছেন। উনার জন্মতারিখ কবে, এটা কিন্তু উনি জানেন না। পুরনো দিনের লোকেরা কোনো রকমে জন্মসাল মনে রাখতেন ঠিকই, কিন্তু  দিন তারিখের অত হিসাব রাখতেন না। তবে আমার দাদার কেসটা একটু ভিন্ন। উনি দাবি করেছেন, উনার শৈশবের স্মৃতি একদম স্পষ্টভাবে ফিরে আসছে। এমনকি জন্মের সময়কার স্মৃতিও উনি আশ্চর্যভাবে মনে করতে পারছেন। আমাদেরন বিজ্ঞান ক্লাসের স্যার বলেছেন, মানুষ নাকি তার শৈশবের ৩বছরের আগের স্মৃতি মনে করতে পারে না। আমার দাদা পারছেন। তাও বুড়ো বয়সে এসে। দাদার স্মৃতি অনুসারে, উনার জন্মের সময় বেশ শীত পড়েছিল। এমনকি ঘন কুয়াশাও হয়েছিল, এটাও উনার স্পষ্ট মনে আছে। শীত এবং কুয়াশা মোতাবেক উনার জন্ম ডিসেম্বরের ১২তারিখ। তখন আ...

এক টুকরো আকাশ !

এক টুকরো আকাশ কিনবো তোমার নামে! বিরাট সাইনবোর্ডে লিখা থাকবে 'এখানে পাখিদের ওড়া নিষেধ, ওড়বে না কোন প্রজাপতি কিংবা কিশোরের লাগামহীন ঘুড়িও' অ্যারোপ্লেন নামক দানবও যাতে চাকা না মাড়ায় এদিকটায় মেঘ থাকবে না, গর্জন থাকবে না, কেবল নীল রঙ থাকবে। সূর্যটাকে বানিয়ে দেবো আমার আকাশ গোলাম। কখনও যদি ইচ্ছে হয় তীব্র শীতে দুজন মিলে একটু করে রোদ খাবো। পোষা সূর্য একটুখানি রোদ দিয়ে আবার সরে যাবে। ভীষন খরায় ইচ্ছে হলে মেঘবিহীন বৃষ্টি নামাবো দুজন মিলে! আকাশের এক কোনে ঝুলিয়ে দিবো আঁটসাঁট চাঁদটাকে। তোমার আলোয় চাঁদ জ্বলবে, আমি চাঁদে বসে তোমায় দেখে দেখে কবিতা লিখবো। এক টুকরো আকাশ কিনবো তোমার নামে! আকাশের গায়ে আমার পাইক পেয়াদা তারা থাকবে মিটিমিটি মাঝরাত্তিতে ঘুম ভাঙ্গলে সূর্যকে আদেশ দিবো 'সকাল আনো, আলো ভাঙ্গা আলিঙ্গন দাও' তারপর দু'জন মিলে লিলুয়া বাতাস ধরে হেঁটে যাবো কখনও বা রোদদুপুরে সূর্যটাকে কান ধরে রান নামাবো জোছনা কম দেয়ার অপরাধে চাঁদকে বহিস্কার করে, তোমায় সেঁটে দেবো আকাশে। তারপর আমি পৃথিবীর সকল নিয়ম ভেঙ্গে তোমার চারপাশে ঘুরবো। আকাশে পাখি নেই বলে তুমি আফসোস করবে আমি বলবো 'চলো দুজন মিলে ও...

শুভ জন্মদিন মৌ আপু !

আমার মুখের হাসি নাকি রুই মাছের মতো !! আমার আম্মু বলে আমার মুখের হাসি দেখলে নাকি তার বুকটা ভরে যায়, বন্ধুরা বলে বদমাইশ বদমাইশ লাগে আর সুন্দরী মেয়ে বন্ধুরা বলে, " বিরক্তকর " !! ঘটনা ১ একটা চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছি এমন সময় পরিচিত এক আঙ্কেল এসে হাজির। আমি তাকে দেখা মাত্রই চমৎকার একটা হাসি দিলাম, সে সঙ্গে সঙ্গে মাথা অন্য দিকে ঘুরিয়ে হাটা শুরু করলো। আমি দৌড়ে গিয়ে পেছন থেকে তাকে ডাকলাম, বললাম- - আঙ্কেল কি হলো, কোথায় যাচ্ছেন ? চা খাবেন না ? - না বাবা !! - ক্যনো ?? আপনি কি রাগ আমার উপর ?? - আরে না বাবা, আমি যাই। - আমি লক্ষ্য করেছি আমাকে আপনি একেবারেই সহ্য করতে পারেন না, কারনটা কি ?? আমার হাসি কি আপনার ভালো লাগেনা ?? - তোমার হাসি দেখলে আমার ভয় লাগে বাবা !! - কারনটা কি আঙ্কেল ?? - তোমার এই হাসি দিয়েই তুমি আমার যত্নে গড়া ফুলের বাগানের সব ফুল চুরি করছো, চুরি করছো সেটাও সমস্যা না বেশী কষ্ট পাইছি আমার দামী দামী গাছের চারাগুলা পারায় পুরায় নষ্ট করছো !! - মানে, ইয়ে আর কি, আঙ্কেল তখন তো ছোট ছিলাম বুঝি নাই !! - ও তুমি তখন ছোট ছিলে আচ্ছা বড় হওয়ার পর কি করেছ সেটাও কি তোমাকে বলতে হবে ?? - ওরে খো...

জমজ জন্মদিন!

আমার গাধামির ভুরি ভুরি উদাহরন আছে..স্কুল লাইফের প্রায় পুরোটাই এমন গাধামিতে ভরা..আর এই জন্য আমার কানদুটো স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড়.. ছোট ক্লাসে একবার পরীক্ষায় রচনা এলো "সবুজ পৃথিবী"..আমি একটুও ঘাবড়ে না গিয়ে লিখে ফেললাম রচনা.. কয়েকদিন পর টিচার এল খাতা দিতে..একে একে সবার খাতা দিয়ে দিলেন...সব শেষে এলো আমার পালা..স্যার আমার খাতা হাতে নিয়ে আমাকে তার পাশে দাড়া করিয়ে "সবুজ পৃথিবী" র উল্লেখ যোগ্য অংশ পড়ে শোনাতে লাগলেন.. "আমাদের পৃথিবীকে সবুজ পৃথিবী বলা হয় কারন, -পৃথিবীর আকার হল সবুজ আপেলের মত গোলাকার.. -পৃথিবীতে লাল শাক আর বেগুন ছাড়া আর বাকী সব তরকারি সবুজ.. -পৃথিবীতে তিন রকমের সবুজ পাওয়া যায়, যেমন হালকা সবুজ, নরমাল সবুজ আর গাড় সবুজ.. -আমরা সবুজ ভালবাসি তাই বাবা মায়েরা ছেলেদের নাম সবুজ রাখে.." সারা ক্লাসের পোলাপাইন তখন হা হা হো হো হি হি করে হাসতে হাসতে একে অন্যের উপর গড়িয়ে পরছে..আর স্যারের হাত আমার ডান কান ধরে টানা টানি করছে.. পুরাই বেইজ্জতি অবস্থা..ফ্রী তে স্যার আমার কান ম্যাসাজ করেই যাচ্ছেন তো করেই যাচ্ছেন.. আমার স্মৃতি শক্তি মাশাল্লাহ ভাল..আর তাই তো ব্যাংকে যখন...

আবার এসো !

এমন করে হাসলে কেন, মারলে কেন আমায়? উসকে দিলে এমন করে সাধ্য বা কার থামায়! ক্ষতর মাঝে হচ্ছে ক্ষরণ, ক্ষেপছে ভীষণ ক্ষ; আবার এসে আবার হেসে উসকে আবার দিয়ো। হাসব আবার, ফাঁসব আবার তোমার ফাঁসির ফাঁসে; এখন বুঝি, উসকানিরা কেমন করে আসে! এখন আমার দিন কাটে না কিসের যেন ভয়ে; আবার এলে আমায় খুঁজো তিনটে রঙিন ছয়ে।

দেবদাসের জন্য দোয়া।

ঘুমানোর আগে আমি একটু কান্নাকাটি করতে পছন্দ করি। আজ কান্নাকাটি করার জন্য দেবদাসকে বেছে নিলাম। দেবদাসের শেষ লাইনগুলো::: এখন এতদিনে পার্বতীর কি হইয়াছে, কেমন আছে জানি না। সংবাদ লইতেও ইচ্ছা করে না। শুধু দেবদাসের জন্য বড় কষ্ট হয়। তোমরা যে-কেহ এ কাহিনী পড়িবে, হয়ত আমারই মতো দুঃখ পাইবে। তবু যদি কখনো দেবদাসের মতো এমন হতভাগ্য, অসংযমী পাপিষ্ঠের সহিত পরিচয় ঘটে, তাহার জন্য একটু প্রার্থনা করিও। প্রার্থনা করিও, আর যাহাই হোক, যেন তাহার মতো এমন করিয়া কাহারও মৃত্যু না ঘটে। মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময়ে যেন একটি স্নেহ-করস্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে—যেন একটিও করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারও এক ফোঁটা চোখের জল দেখিয়া সে মরিতে পারে। ..... দেবদাসের জন্য দোয়া।

দুঃখ করো না, বাঁচো !

মনে-মগজে ধরেছে তোমার শত জনমের জঙ, ভুলে কি গেছ কাঠগোলাপের কত শত হয় রঙ? কাঠগোলাপের কাঠগড়াতে আবার দাঁড়াবে, এসো; মুখোশ খুলে মুখটি তুলে একটু নাহয় হেসো। হাসলে তুমি হাসবে শহর, কোষ্ঠকঠিন কাচও; জানো না, মেয়ে? গুন দা বলেছে— দুঃখ কোরো না, বাঁচো! দুখিনী নাকি দুখবিলাসী— নিজেকে নিজেই শুধাও; চায়ের কাপের এক চুমুকে দুঃখ হবে উধাও। উড়ে-আসা কিছু জুড়ে-বসা মেঘে নিজেকে কেন মাখাও? বোসো, বালিকা, কবির পাশে; একটি বিকেল চা খাও! তোমার চুমুর অপেক্ষাতে চায়ের কাপের আঁচও; জানো না, মেয়ে? গুণ দা বলেছে— দুঃখ কোরো না, বাঁচো! বৃষ্টি চেনো? জোছনা চেনো? সমুদ্দুরের বাড়ি? নীল নীলিমার জলকে যাব, দুঃখকে দাও আড়ি। দিগবালিকা, দিগ্বলয়ের দিগন্তকে ছুঁয়ে; হৃদমাঝারের হৃদয় থেকে দুঃখকে নাও ধুয়ে। শঙ্কা কিসের, সাবালিকা? আদিম নাচন নাচো! জানো না, মেয়ে? গুণ দা বলেছে— দুঃখ কোরো না, বাঁচো! জীবন যখন বেঘোরে হারে, কবিতা তখন জেতে; কবিতা পড়ো, কবিতা পরো, কবিতা থাকো খেতে। কবিতা তোমার প্যারাসিটামল, দুঃখ নেবে শুষে; কী হবে এই একজনমে দুঃখদানব পুষে? কবিটা তোমার হাতের নাটাই এবং হাতের পাঁচও; জানো না, মেয়ে? গুণ দা বলেছে— দুঃখ কোরো না, বাঁচো!

কোলকাতা !

পর্ব ১ একবার দারুন বিপদে পড়েছিলাম। বোম্বে থেকে ট্রেনে উঠেছি। কলকাতা যাবো। ট্রেনের নাম হাওড়া এক্সপ্রেস। বেশ সস্তার ট্রেন। মোটামুটি দিন দুয়েক ট্রেনেই থাকতে হবে। ট্রেনে ওঠার পর আমার পাশের সিটে বসেছেন, কলকাতার এক দাদা। মোটামুটি মস্তান টাইপের মানুষ। ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর, তিনি বললেন, এই তোমার চপ্পলখানা দাও দিকিন। একটু টাট্টিখানায় যাবো। এই বলে সেই ভদ্রলোক আমার স্যান্ডেল নিলেন। বেশ ভালো স্যান্ডেল । বাটা কোম্পানির। ওমা। সেই লোক আর স্যান্ডেল দেয় না। স্যান্ডেল পরে হাঁটে, অন্য কামরায় যায়। ঘোরাঘুরি শেষে সেই স্যান্ডেল সিটের তলায় নিয়ে শুয়ে থাকেন। বিদেশ বিভুই জায়গা। সাহস করে কিছু বলতে পারি না। একবার ক্ষীণ গলায় বললাম, ও দাদা, স্যান্ডেলটা দেবেন। বাথরুমে যাবো। সে লোক ঝাড়ি মেরে বলল, আরে বোসো। তোমার চপ্পল তো আমি খেয়ে ফেলছি না। দোবো। এত অস্থির হচ্ছো কেন। ঝাড়ি খেয়ে আমি তবদা মেরে বসে আছি। পুরো কামরার লোকজন দেখছে। কেউ কিছু বলছে না। এমন সময় একটা ভীষণ কালো মতো লোক খুব ঠান্ডা গলায় হিন্দিতে কলকাতার দাদাকে একটি বাক্য বলল। হুবহু হিন্দি বাক্যটা বলতে পারবো না, শুধু মনে আছে, সে বলল, ওহে বান্দির পুত, এই বাবুর স...

"মায়াকান্না"

পৃথিবীর যে কোন মানুষ যদি তোমার সামনে কাঁদতে থাকে, তাহলে তার প্রতি তোমার একটু হলেও সিমপ্যাথি জাগবেই ... সমস্যাটা হলো, সেই মানুষটা যদি কাঁদার আগে এবং পরে তোমাকে বাজেভাবে আঘাত করে, তাহলে সেই কান্নার কোন মূল্য থাকে না!! "আর কখনো এমন করবো না" - নামক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে মানুষটা বারবার একই কাজ করতে থাকে, তার কান্না দেখে একসময় আর মায়া লাগে না ... বরং ভন্ডামি বলে মনে হয় !! বারবার অনুরোধ করার পরেও যে মানুষটা তোমার সব অনুরোধকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তোমাকে আঘাত করার মত কাজ করে বসে, একসময় "ক্ষমা" ব্যাপারটা তার জন্য আসে না ... মন থেকে আসে না !! যে কাজটা তোমাকে কষ্ট দেয়, একটা মানুষ সেই কাজটা প্রথমবার যখন করে, সেটা তার "অনিচ্ছাকৃত ভুল" ... কাজটা সে দ্বিতীয়বার যখন করে, সেটা তার "ইচ্ছাকৃত ভুল" ... সেই একই কাজটা মানুষটা তৃতীয়বার যখন করে, সেটা তোমার জন্য তার পাঠানো একটা "মেসেজ" ... সেই মেসেজে লেখা থাকেঃ তুমি একটা ভীষণ রকমের বোকা ... বারবার তোমাকে আমি "ভুল" এর অজুহাতে কষ্ট দিয়ে দিয়ে ঠকাচ্ছি ... তারপর আমার কান্না দেখে বারবার তুমি বোকার মত আমা...

কাবিননামার কসম।

গতরাত ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বিভীষিকাময় রাত্রি। রাত দুইটার মতো বাজে। আমি ল্যাপটপে গভীর মনোনিবেশ সহকারে, দারুন দরকারি একটি কাজ করছি। আচমকা মাথার উপর পত পত শব্দ শুনে চমকে উঠলাম। উপরে তাকিয়ে আমার রক্ত হিম হয়ে গেলো। দেখি বিশালাকায় একটি কদাকার পাখি, খুব সম্ভবত ইগলই হবে, ডানা মেলে উড়ছে। এই সময় যেকোনো সাহসী বাঙালি পুরুষ যা করে, আমিও তাই করলাম। ও মাগো বলে চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠলাম। তারপর এক দৌড়ে বেডরুমে ঢুকে ঘুমন্ত স্ত্রীর কোলে ঝাপিয়ে পড়লাম। বৌ'নী চমকে উঠলো। কী হয়েছে তাহীম? আমি ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে বললাম, বৌ'নী ড্রয়িংরুমে একটা ভয়ংকর খেচর উড়ছে। ঈগল বা বাজপাখি কিছু একটা হবে। বাঁচাও বৌ'নী, বাঁচাও। পুলিশে ফোন দাও। দোয়া দুরুদ পড়ো। আমার স্ত্রী কিঞ্চিৎ মার্কিন বিরোধী। কাজেই খেকিয়ে বলল, এটা কি তোমার আমেরিকা পাইছো? খুলনা শহরে তুমি ইগল কোথায় পাবে? আমি ডুকরে কেঁদে উঠলাম। বললুম, বৌ'নী আমাদের কাবিননামার কসম। ওটা ঈগল কিংবা উঠপাখি কিছু একটা হবে। আমি নিজের চোখে দেখেছি। বিশ্বাস করো। খবরদার ওই ঘরে যেও না। শতকরা একশত ভাগ বাঙালি স্ত্রী যেমনটা হয়, আমার স্ত্রীও তার ব্যতিক্রম নন। তারা ভূত বি...

রাগ !

সপ্তাহখানেক আগের কোন এক মধ্যরাতের আমার কথায় বালিকা ভীষণ কষ্ট পেয়ে গিয়েছিল। আমি ওটা ভুলে করে মনের আক্ষেপ আর কষ্ট নিয়ে বলেছিলাম। আমি ব্যাপারটা ভুলে গেলেও, সে একদম ভুলে নি !! হাজারবার বলা SORRY তে তার মন গলে নি। কথা ছিল, আমাকে কান ধরতে হবে ... দুঃখজনকভাবে এটা কোন বহু নির্বাচনী প্রশ্ন না। এখানে আমার জন্য আর কোন অপশন ছিল না !! এত বড় হয়ে গেছি, এখন কান ধরা যায় নাকি ?? - কথাটা গলায় এসে আটকে গেলো। আমি দেখলাম, বালিকা তার বড় ফ্রেমের চশমা পরে আমাকে ইশারা দিলো কান ধরার জন্য !! আমার মনে হলো, আমি একটা স্কুলের নিরীহ শিশু। আমার চোখের সামনে রাগী মাস্টারনী বেত হাতে বসে আছে। নিজের অজান্তেই আমার দুই হাত আমার কান স্পর্শ করলো !! বালিকা যখন এমনিতে হাসে, তখন তাকে সুন্দর লাগে। অভিমানী বালিকা যখন ফিক করে হেসে দেয়, তখন তাকে ভয়ংকর সুন্দর লাগে। সুন্দর আর ভয়ংকর সুন্দর এর মাঝে অনেক পার্থক্য !! সুন্দর এর প্রতি মানুষের শুধু ভালোলাগা জন্মায়। ভয়ংকর সুন্দর এর প্রতি মানুষের ভালোবাসা জন্মায় !! আমি ফিসফিস করে বালিকাকে বললাম, "আমার চোখের দিকে তাকাও" বালিকা মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো। আমার ধারণা, সে এখন অন্যদি...

ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা নামে আন্তর্জাতিক, কামে না।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা নামে আন্তর্জাতিক , কামে আসলে ঢাকার নিউমার্কেটের মোবাইল ভার্সন। তবে এক জায়গায় তাঁরা আন্তর্জাতিক মানের। মানে খাবারের দামটা আন্তর্জাতিক মানের। ( মনেহয় তাঁরা ডলার বা পাউন্ডে বিল করে ) সেখানে হাজীর বিরিয়ানী , নান্নার বিরিয়ানী , স্টার কাবাব থেকে শুরু করে নাম করা অনেক দোকান দেখবেন যা ১০০ % ভুয়া। নিজেরা বিরানী বানায়া নাম দেয় হাজি / নান্নার বিরিয়ানি। দাম দেখবেন ১০০ টাকা , খাওয়ার পরে বিল ধরায়া দিবে ৬০০ - ৮০০ টাকা !!! বিল দিতে তেড়ি বেড়ি করবেন ফলাফল আপনার মোবাইল ঘড়ি   রাইখা দেয়া হবে / আপনার গ্রুপ একটু বড় হইলে তাগো আরো বড় গ্রুপ ডাইক্কা আইনা মাইর দেয়া হবে , আই মিন মগের মুল্লুক কি জিনিস তা বুঝায় শ্রেষ্ঠ জায়গা এটা। তবে এটা নতুন কিছু না , প্রতিবারই এমন হয়।   সো টাকায় যদি আপনারে না কামড়ায় তাইলে মাই সাজেশন মেলায় যান , ঘুরেন ঘারেন বাট যাওয়ার আগে ভালো মত খাইয়া যাইয়েন বা সাথে করে খাবার নিয়ে যাইয়েন। ঐখানে বাথরুমের ব্যাবস্থা আছে টেনশনের ক...

হৃৎপিণ্ডের কচুপাতা !

হৃৎপিণ্ডে আধেক মায়া, আধেক দেখি ছল; ছলাৎ-ছলাৎ ছিটকে পড়ে কচুপাতার জল। এই দেখি তো তুলতুলে সফট, আবার দেখি রকিং; ব্যাপারটা বেশ শকিং! কখন কিসে 'না' হয়ে যায়, কখন কিসে 'হ্যাঁ'? এই তো শুনি অট্টহাসি, এই তো শুনি 'ভ্যাঁ'! হঠাৎ দেখি পিন-সাইলেন্স, হঠাৎ টু-মাচ টকিং; ব্যাপারটা বেশ শকিং! কে জানে সে কখন জ্বলে, কখন সে যায় নিভে; কী জানি কী মগজে তার, কী জানি কী জিভে! হঠাৎ দেখি লাজুক তারে, হঠাৎ নিলাজ মকিং; ব্যাপারটা বেশ শকিং! একহাতে তার খণ্ডবরফ, আরেক হাতে পানি; বরফ-পানির হঠাৎ খেলায় দগ্ধ হৃদয়খানি! হঠাৎ কোথায় সুদূর হারায়, হঠাৎ দ্বারে নকিং; ব্যাপারটা বেশ শকিং! ব্যাপারটা কী শকিং, নারীহৃদয়ের কেমিস্ট্রি বোঝেননি খোদ হকিং!

তামাসা !

গতকালকে সারাদেশে রেকর্ড পরিমান শীত পড়ছে। উপয়ালার অশেষ রহমতে এই শীতে গরম কাপড় গায়ে জড়ানোর তৌফিক হইছে। আমার মত ফ্যান/এসিতে ঘামাইন্না পোলায়ও কড়া ঠান্ডায় সুইটার জ্যাকেট পিন্দা প্যাকেট হইয়া উম লইতাছিলাম। হঠাৎ বান্ধবীর মাথায় কোন ভুত চাপছে কে জানে, আমার সুখ উনার সহ্য হইলো না। আতকা আমার জ্যাকেটের হুডি টাইন্না পিঠের দিকে এক টুকরা বরফ ঢুকায় দিসে!!! আমি না পারতাছি একটানে জ্যাকেট খুলতে না পারতাছি বরফ বাহির করতে ঐদিকে সামনে দাঁড়ায় দাঁড়ায় আমার তামাসা দেইখা ওয় হিহি কইরা হাসতাছে!! বুশ লাদেনেরে সামনে পাইলেও তো মনেহয় এই শীতে গরম কাপড়ের ভিত্রে এরুম অমানবিক নির্যাতন করতো না দেশে নারী নির্যাতন আঈন আছে কিন্তু অবলা থুক্কু ‘অবল’ পুরুষ নির্যাতন আঈন নিয়া কারো কোন চিন্তা নাই। করবোডাও বা কে? উপরমহলের সকল হর্তা কর্তা সবই তো নারী। দুই দিনের দুনিয়ায় এক দিনের লাইজ্ঞাও পুরুষ সমাজেরে দেখার কেউ নাই। রাজীব ভাই এর মত নিশ্বাস ভারী করা ছাড়া আর কোন গতি দেখতাছি না। বিঃদ্রঃ নিশ্বাসঃ নির্যাতিত পুরুষ সংঘ।

বিয়ের রাতে যা যা করবো।

২০১৫ সালে আমি যখন এবি ব্যাংকের খুলনা ব্রাঞ্চে নিয়োগ হলাম। তখন আমার সব বন্ধুরা নর্দান ইউনিভির্সিটিতে পড়াশোনা করে। অনেক  অনেক বন্ধুর মাঝে সেখান থেকে আট দশ জন বন্ধুর সাথে বেশ খাতির হয় যায়। এর মধ্যে একটা বন্ধু প্রায় বিকেলেই আমার সঙ্গে আড্ডা দিতে আসত। আমার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার জন্য অপেক্ষক করত। এরপর দুজনে মিলে চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে যে যার বাড়ি ফিরে যেতাম। দিন যত যেতে লাগলো আমাদের সম্পর্ক আরো মজবুত হতে লাগলো। ২০১৬ সালের দিকে আমার হঠাং বিয়ে করতে ইচ্ছা করে। পরের দিন অফিসে শেষ করে ওই বন্ধুর সঙ্গে চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছি। এমন সময় গল্পে গল্পে ওকে বললাম, - দোস্ত, আম্মুকে মেয়ে দেখতে বলছি। - কেন তুই কি সারাদিন কম মেয়ে দ্যাখোস নাকি (হা হা হা) - আরে বিয়ার জন্য ব্যাটা - এখন বিয়ে করবি ক্যান? এখন কি আটকায় যাওয়ার সময়? লাইফ থ্যাইকা মাস্তি তো উইড়া যাইবে ব্যাটা। - দোস্ত, আমি তো চাকরি করি আমার তো একটা বউ লাগে। - ধুর ব্যাটা, পারলে চার-পাঁচটা প্রেম কর একসঙ্গে কিন্তু বিয়া করিস না মামা। - আমি তো করতে চাই না, আম্মু দিতে চায়। আম্মুর বয়স হইছে। একা একা সময় কাটে না। চোখেও কম কম দেখে। মাঝে মাঝে ...