Posts

Showing posts from 2017

জনজাল

একটি দেশে যেকোনো শক্তিকে টিকে থাকতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন জনসমর্থন। জনগণের একটি অংশের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার যেমন টিকতে পারে না, তেমনি টিকতে পারে না এমনকি কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীও। পৃথিবীর যেকোনো জঙ্গিসংগঠনের ঠিকুজি খুঁজলে দেখা যাবে সংগঠনটির ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের জনগণের একাংশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন আছে, নিদেনপক্ষে 'সফট কর্নার' আছে। স্বীকার করা হোক বা না হোক, তিক্ত সত্য হচ্ছে জঙ্গিদের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশের নীরব সমর্থন আছে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের এই নীরবতাকে পুঁজি করেই জঙ্গিরা বাংলাদেশকে বাংলাস্তানে পরিণত করার সুযোগ পেল। বাংলাদেশ একদিন বাংলাস্তানে পরিণত হবে বলে যে আশঙ্কাটি শুভবুদ্ধি-সম্পন্ন মানুষেরা করে আসছিলেন এত দিন ধরে, সেই আশঙ্কা সত্য হয়েছে এবং গত পহেলা জুলাই রাত নয়টা থেকে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাস্তানে পা রেখেছে। 'বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো' বাগধারাটি মুসলমান বাঙালিদের জন্যই বোধহয় রচিত হয়েছিল। তারা জানেনই না কখন প্রতিবাদ করতে হবে, কখন নীরব থাকতে হবে। মুসলমান বাঙালিদের অ-সময়োচিত নীরবতাই বাংলাদেশের বাংলাস্তান হওয়ার পেছনে বহুলাংশে দায়ী। আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদ...

বাংলার কীর্তিকলাপ

আমার কাছে এক শিক্ষার্থী এসেছে। সে কোনো এক বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছে। তার গবেষণার বিষয় সোশাল মিডিয়া। আমার কাছে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের সোশাল মিডিয়া সম্পর্কে সে কিছু জানতে চায়। আমি তাকে খুবই যত্ন করে চা খাওয়ালাম। বাংলাদেশের চা। সে খুবই আগ্রহ নিয়ে চা খেলো। তার খাওয়া শেষ হওয়ার পর, আমি গলায় দুই লিটার বিনয় ঢেলে বললাম, বাংলাদেশের সোশাল মিডিয়া নিয়ে আমি কিছুই জানি না। সে খানিকক্ষণ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো। তারপর বলল, কিন্তু আমি তো শুনেছি তুমি ফেসবুকে খুব একটিভ। – ঠিকই শুনেছো। আমি যতক্ষণ সময় ফেসবুকে থাকি, ততক্ষণ সময় আমি আমি অফিস, সংসার, বাথরুম এমনকি বিছানায়ও থাকি না। আমার একটা ছোট্ট প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ আছে। যখন শাওয়ার নিই, তখনও আমি ফেসবুকে চোখ রাখি। সেই ছোট্ট প্লাস্টিকের ব্যাগে আমার মোবাইল থাকে। পানিতে যাতে মোবাইল ভিজে না যায় এজন্য এই ব্যবস্থা। এই কথা শুনে তরুণ গবেষকটির চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। সে বলল, আমি তোমার এই ফেসবুক ব্যবহারের অভিজ্ঞতাটাই শুনতে চাই। এবার আমি গলায় দুই কেজি পরিমাণ কনক্রিট ঢেলে বললাম, সেই অভিজ্ঞতা আমার পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। স্যরি। তুমি এবার আসো। তোমার সাথে...

প্রিয় আনিসুল হক!

আনিসুল হকের একটি বিশেষ প্রতিভা নিয়ে কাউকে কথা বলতে দেখলাম না। এই প্রতিভাকে বলে, কনফ্লিক্ট ম্যানেজমেন্ট। দুইটা দল ঝগড়া করছে, তাদেরকে মিলমিশ করিয়ে দিতে তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। এই রকম দুটি বড় ঘটনা দেখার সৌভাগ্য আমাদের হয়েছিলো। ব্যান্ডসঙ্গীত তখন সবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এই নতুন ধারার গান শুনে তরুণরা আত্নহারা। কিন্তু প্রবীণের মাথা ঝাঁকিয়ে বলছেন, গেলো গেলো, সব গেলো। আনিসুল একটি অভাবনীয় ব্যাপার ঘটালেন। টিভিতে একটি গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। যারা ইস্ত্রি করা পাঞ্জাবি পড়ে, পবিত্র শান্তিনিকেতনীয় ভাব নিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীতসহ গেয়ে থাকেন, তাদেরকে তিনি ডাকলেন। আরেকদল আমন্ত্রণ পেলো। ঝাকড়া চুলের সানগ্লাস পড়া ব্যান্ডের গাতক-গাতিকাবৃন্দ। দুই দল পাশাপাশি বসে গানবাজনা করলো। মজার যেটা ব্যাপার ঘটলো, রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পীরা গাইলেন ব্যান্ডের গান। আর ব্যান্ডের ছোকড়ারা হারমোনিয়াম বাজিয়ে গাইলো রবীন্দ্রসঙ্গীত। এই আয়োজনের নাম দেয়া হলো- জলসা। অভূতপূর্ব এই অনুষ্ঠান দেখার পর দুই দলই খুবই সহজে বুঝে ফেললো, সুরের কোনো দল নেই। অহেতুক দলাদলি ব্যাপারটা কেবল মানবজাতির জন্য প্রযোজ্য। আরেকটি কান্ড তিনি করেছিলেন। তখন আওয়া...

এই জন্য আমি হাজারটা পথ হেঁটেছিলাম

একেকটি সাহিত্য-আসর একেকটি পূর্ণাঙ্গ বিনোদন-ব্যবস্থা। বিবিধ বৈশিষ্ট্যের বহুবিধ কবির দেখা মেলে সাহিত্য-আসরে। কবিতা শুনতে-শুনতে একপর্যায়ে ক্লান্তি এলেও এই বর্ণাঢ্য-বিদগ্ধ কবিদের বাহারি বৈচিত্র্য দেখে বলিহারি যেতে হয়, সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায় নিমিষেই। এই আসরে না গেলে টের পাওয়া যায় না শিল্পিত কবিতার পেছনের কারিগরেরা কতটা লোমহর্ষক, কতটা চাঞ্চল্যকর। সাহিত্য-আসরে আগত কবিদেরকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায় তাদের চরিত্র ও বৈচিত্র্যের আলোকে। প্রত্যেকটি সাহিত্য-আসরে থাকে একটি করে গলাভাঙা গ্রুপ। এরা মঞ্চে এসে বক্তব্য শুরু করবেন এভাবে— 'আসলে আমার ঠাণ্ডা লেগেছে, গলাটাও ভেঙে গেছে। এই গলা নিয়ে আমি আপনাদেরকে কতটা ভালো আবৃত্তি উপহার দিতে পারব, জানি না। তবুও চেষ্টা করছি।' তাদের গলা অবশ্য বারো মাসই ভাঙা থাকে এবং প্রতিটি আসরে ভাঙা গলার কথা জাতিকে তারা সযত্নে স্মরণ করিয়ে দেন। ঐ ভাঙা গলা নিয়েই তারা যে পৌনঃপুনিক পদ্যতাণ্ডবের পরিচয় দেন, তাতে গলা ভাঙা না থাকলে কী যে হতো— ভাবতেই গা-হাত-পা শিউরে ওঠে। একটি করে তেলেগু গ্রুপ থাকে প্রতিটি আসরে। এই তেলবাজ গ্রুপটি সব কিছুতেই ধন্য বোধ করেন। এরা মঞ্চে উঠে প্রথমেই ব...
আদ্রিত মানে ভাইটি আমার, বন্ধু বারো মাস.. আদ্রিত মানে শীতল পাটি, বেচে থাকার আশ.. আদ্রিত মানে হাইওয়ে গুলো, দাপিয়ে কাপিয়ে ঘোরা, আদ্রিত মানে সিংহ হৃদয়, পুরোটা সোনায় মোরা.. আদ্রিত মানে সব বাধা কে, দুমড়ে মুচড়ে চলা.. আদ্রিত মানে রাতভর গান, খোলা দীল মিঠে গলা.. আদ্রিত মানে নীল সে আকাশ, দমকা ঝড়ো হাওয়া.. আদ্রিত মানে স্বাধীনতাটাকে, নতুন করে পাওয়া.. আদ্রিত মানে নতুন সূর্য, শুভ্র নতুন দিন.. আদ্রিত এক সুন্দর্যের নাম, মুখে হাসি অমলিন.. আদ্রিত ভাই শুভ জন্মদিন।

কিছু স্মৃতি

রোড আইল্যান্ড এর প্রভিডেন্স থেকে নিউইয়র্ক যাব..বাস স্টপে দাঁড়িয়ে আছি..ঘড়ির কাটা ধরে ঠিক ঠিক ১১.১০ মিনিটে পিটার প্যান বাস এসে থামল.. বাস থেকে নেমে এলো পাইলটের ড্রেস পড়া এক সুদর্শন ভদ্রলোক..মোবাইলে সেভ করে রাখা কনফার্মেশন নাম্বার দেখে হাসি মুখে একে একে সবাইকে বাসে তুলে নিলেন.. বাস চলতে শুরু করতেই শান্ত স্বরে বলতে শুরু করলেন, "শুভ সকাল..পিটার প্যান বাস সার্ভিসে তোমাদের স্বাগত জানাচ্ছি..এই কথাগুলো আমি সাধারনত টার্মিনালেই বলে থাকি, কিন্তু তোমরা যেহেতু মাঝরাস্তা থেকে উঠেছ, তাই তোমাদের জন্য আবার বলছি.. এই বাস কিন্তু নিউইয়র্ক যাবে, সো তোমরা আশা করি ঠিক বাসেই উঠেছ..নিউইয়র্ক যেতে সাধারনত ৪ ঘন্টার কিছু কম সময় লাগে ট্রাফিকের উপর ডিপেন্ড করে..তবে যেহেতু আজকে সোমবার, সপ্তাহের প্রথম উইকডে, আমার মনে হয় কিছুটা সময় বেশিই লাগবে.. বাসে প্লিজ ধুমপান করবে না..আর মোবাইলে যদি কথা বলতে হয় তবে একটু আস্তে বইল যাতে আশেপাশের কারো ডিস্টার্ব না হয়..তোমার কাছে যদি হেডফোন থাকে তবে খুব ভাল, নিজের গান নিজেই শুনতে পারবে..আর যদি না থাকে তবে মোবাইলের সেটিং এ গিয়ে ভলিউমটা কমিয়ে নিও.. আমি তোমাদের আরামের কথা ভেবে বাসের ...

ফকিরের রসত্ব

ফকির হয়ে সাহস এত, করব কী আজ তোরে; করব গুলি, উড়বে খুলি, পাঠিয়ে দেবো গোরে! নুন আনতে পান্তা ফুরায়, হারামজাদার জাত; বামন হয়ে চাঁদের দিকে বাড়াস কেন হাত? কাজের বেটির পুত্র হয়ে দেড়-দুবেলা খেয়ে, ভালোবাসার সাহস দেখাস চৌধুরীদের মেয়ে! এই ছোটলোক, জানিস কি তুই আমার মাসিক আয়? কয়শো-হাজার কর্মচারী আমার পরে-খায়? কয়েক পুরুষ খেলেও বসে শেষ হবে না ধন; মুকুটবিহীন রাজা আমি, আমিই দেশের ডন। ধনে-মানে আমার মতো রাষ্ট্রে আছে কজন? তোদের মতো চাকর-বাকর আমার কয়েক ডজন। ছয়টা বাঁদি আমার মেয়ের, সকাল-বিকাল সেবা; কয়টা আছে টয়টা আমার— হিশাব রাখে কে বা! জানিস কত খরচ করে আমার মেয়ে মাসে? গাড়ির মডেল পালটে দিলে তবেই খানিক হাসে। বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে করতে গেলে চিল, খাওয়ার পরে শোধ করে সে লক্ষ টাকা বিল। মাসের শেষে বিদেশ যাবে, বিদেশ থেকেই বাজার; আমার মেয়ে রানির মেয়ে, আমার মেয়ে রাজার। পারবি কি তুই কিনতে কভু একটা গাড়ির চাকা? বংশ বেচেও পারবি দিতে মেকআপ কেনার টাকা? রাখবি কোথায় আমার মেয়ে? আছে কি তোর কিছু? কয় টাকাতে ছাড়বি, শুয়োর, আমার মেয়ের পিছু? কে দিয়েছে সাহস তোকে ঢুকতে বাড়ির ভিতর? কী আছে তোর? কী আছে তোর? হারামজা...
খুব ছোট্ট একটা ঘটনা বলি। আমার তখন কোনো চাকরি নেই। ইভা প্রতিদিন শার্ট ইস্ত্রি করে দেয়। আমি সেই ইস্ত্রি করা শার্ট পরে বের হই। চাকরির ইন্টারভিউ দিতে। দিন শেষে ক্লান্ত এবং ভগ্ন হয়ে বাসায় ফিরি। ''ইভা , আমার চাকরি হয় নি।'' ইভার মন খারাপ হয়। আমাকে বুঝতে দেয় না। অতি গোপনে সে নফল নামাজ মানত করে। যাতে আমার কোনো চাকরি হয়। একদিন বাসায় ফিরে ইভাকে জড়িয়ে ধরলাম। আমার ছোট্ট বুকের মধ্যে দুলতে দুলতে ইভা বলল, তোমার চাকরি হয়েছে ? ওয়াও!!!কবে থেকে অফিস শুরু? বেতন কত? আমি মানবজমিন পত্রিকা থেকে ইন্টারভিউ দিয়ে ফিরেছি। না, আমার চাকরি হয়নি। তবে বাংলা মোটর থেকে সিগারেট কেনার সময় জানলাম, গোল্ড লিফ সিগারেটের দাম আড়াই টাকা থেকে কমে দুই টাকা হয়েছে। সেই আনন্দে ইভাকে জড়িয়ে ধরেছি। পুরো ঘটনা শুনে ইভা আপসেট হলো বটে। কিন্তু তারপরও, তারপরও বলল, ডোন্ট লুজ ইয়োজ ফেইথ। বিশ্বাস হারিও না। তারপর ইভা আমাকে গভীর একটা চুমু খেলো। আমিও চুমু খাবো এমন সময় আবিষ্কার করলাম আমি সপ্ন দেখছি। আমার সপ্ন, আমার বাড়ির বেড়াল ছানাটাও ভাগ্যবান কারণ তার ভাগের চুমুটা সে পাই। আমারটা আর আমি পাই না। ভালো কথা গোল্ডলিফের দাম কতো চলছে? সিগারেট...

রসহীন কষ

আমার স্ত্রীর নাম আপনাদের বলব না, বললে আপনারা তাকে চিনে ফেলতে পারেন। না-না, যা ভাবছেন, ঘটনা সেরকম না, ও সিনেমার নায়কা-টাকিয়া নয়, সামান্য একজন শিক্ষিকা মাত্র। একটা প্রতিবন্ধীদের স্কুলে পড়ায়। সাইকোলজির ছাত্রী ছিল। সেখানে ও দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছিল, অনার্স মাস্টার্স দুটোতেই ফার্স্টক্লাস। বড় বড় চাকরির অফার থাকা সত্ত্বেও কোথায় জয়েন না করে, প্রতিবন্ধীদের সংস্পর্শে থেকে তাদের নিয় কিছু উচ্চতর গবেষণা করা। অতি সম্প্র ওর এমনই একটা গবেষণা আলোড়ন সৃষ্টি করায় পত্র-পত্রিকায় ছবি-টবি এসেছে। এজন্যই ওর নাম বলতে আমার দ্বিধা। অবশ্য গল্প যখন বলতে বসেছি, একটা নাম তো তার বলতে হবে । ধরা যাক, ওর নাম ইভা। গল্পটা হলো বিয়ের দুই বছর পর আমি হঠাৎ করে একজন ভদ্র মহিলার প্রেমে পড়েছি। কাহানিটা খোলসা করে বলা যাক। ইভা যে স্কুলে মাস্টারি  করে সেই স্কুলে সেদিন গিয়েছিলাম। প্রতিবন্ধীদের (পাগল বললে ইভা ভীষণ ক্ষেপে যায়, ওদেরকে প্রতিবন্ধী বললে ও খুশি হয়) স্কুল কেমন হয় এটা দেখার ইচ্ছা অনেক দিন থেকেই। কিন্তু ঠিক চান্স পাচ্ছিলাম না। বিয়ের পর বেশ কয়েকবার ওকে বলেছিলাম, তোমার স্কুলে একদিন বেড়াতে যবো। ও ভ্রু কুচঁকে বলেছিল, কেন, ওটা ক...
আমি জীবনে একবারই গরুর হাটে গিয়েছিলাম। তখন স্কুল থেকে সবে পাশ করেছি। কাকি আম্মা ডেকে পাঠালেন। কাকি আম্মার ডাক অগ্রাহ্য করার সাহস আমাদের কারোরই ছিল না। ড্রয়িংরুমে পারিবারিক মিটিং। আমি, আহাদ, রাহাত, ডাক্তার কাকা, বাবা, মা, রাশেদ কাকা। পারিবারিক বৈঠকের সভানেত্রী যথারীতি কাকি আম্মা। আমাদের গরু কিনতে যেতে হবে। অন্য কারো হাতে এবার দায়িত্ব দেয়া যাবে না। আমরা এতোগুলো পুরুষ মানুষ ঘরে বসে কি করি? গরুর হাটে যাবার কথা শুনে আব্বু মাথা চুলকাতে লাগলেন। ডাক্তার কাকা গভীর মনোযোগ দিয়ে খবরের কাগজের মধ্যে ডুব দিলেন। আমার মনে হলো এক্ষুণি একটা সিগারেট খাওয়া দরকার। কেবল আহাদ আর  রাহাত দুইজন দুইজনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে লাগলো। এই হাসির মানে আমি পরে বুঝেছি। কাকা মৃদুস্বরে বললেন, কিন্তু এতো দূর থেকে গরু নিয়ে আসবো ক্যামনে? কাকি আম্মা পরিষ্কার বলে দিলেন গরু বয়ে আনবার পদ্ধতি। গরুর পাশাপাশি রিকশা থাকবে। সেই রিকশায় থাকবেন আব্বু আর কাকা। গরুর দড়ি থাকবে তাদের হাতে। গরুর হাটবে, পাশাপাশি রিকশা চলবে। পুরো বিষয়টা আমি দিব্যচোখে দেখতে পেলুম। ঐরাবতের মতো গরু চলছে, পাশে রিকশায় বসা আব্বু আর কাকা। গরুর গলার দড়ি তাদের হাত...
কষ্ট এক ধরনের অভিজ্ঞতার নাম। যে যতো কষ্ট পায়, সে ততো অভিজ্ঞ হয়। এই অভিজ্ঞতা কাউকে দেখে বা বলে শেখানো যায়না। শুধু একটু সময়ের ব্যপার, সময় হলে ভাগ্যই তাকে শিখিয়ে দেয়। একবন্ধুর সাথে বাড়ি ফেরার কথাছিল ট্রেনের লম্বা লাইন ভেদ করে প্রথমশ্রেনীর এসির দুইটা টিকিট কাটলাম। বন্ধুকে জানাতেই সে বললো তার এসিতে সমস্যা সে যাবে না। পরের দিন আবার লাইনে দাড়িয়ে থেকে নন-এসির একটা টিকিট কাটলাম সুখবরটা জানাতেই বললো তার পরীক্ষা পিছিয়েছে। সে যেতে পারবে না। এই খুশির সংবাদ শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। কারণ প্রথম টিকিটে ৩৫০০ এবং পরের টিকিটে ১৫০০ টাকায় বেশি বিক্রয় করে মন আবেগে আপ্লুত হয়ে গেল । ভালো অঙ্কের টাকা কামালাম ঠিকই কিন্তু একটা ভালো শিক্ষাও পেলাম একা চলবো পথ হারাবো হাজারো সমস্যার মধ্যে পড়বো কিন্তু কারো সাথে যাবো না। না না না....

বনানী রেলস্টেশন !

তুমি বসে আছ একটা ঘুম ঘুম রেল স্টেশনে। শীতের মাঝদুপুরেও সকালের আলস্য। মিষ্টি রোদ তেরছা ভাবে পড়েছে তোমার গালে। হালকা কনকনে একটা বাতাস দিচ্ছে বলে চাদরটা একটু শক্ত করে জড়িয়ে নিলে তুমি। তোমার পাশে, পায়ের কাছাকাছি অবহেলায় পড়ে আছে তোমার ট্রাভলিং ব্যাগ। একবার ওটার দিকে কটমটে চোখে তাকালে। কবি-সাহিত্যিকেরা যাকে লেখেন অগ্নিদৃষ্টি। যেন তোমার সব রাগ-ক্ষোভ ওটার ওপরেই। আর ব্যাগটাও কেমন কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে পড়ে আছে দ্যাখো! যেন মাথা নত করে রাখা অপরাধী। যেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া কয়েদি। যেন প্রাণভিক্ষা করছে তোমার পায়ে পড়ে। স্টেশনে যাত্রীর চেয়ে খুচরো হকারের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু তাদেরও তেমন হাঁকডাক নেই। বস্তুত এ রকম স্টেশন এ তল্লাটে, জনারণ্যের এই দেশে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু আমাদের গল্পের প্রয়োজনে তোমার চারপাশে নিঃসঙ্গ একটা জগৎ তৈরি করা দরকার। দরকার বলে পুরো স্টেশনে যাত্রী হিসেবে শুধু তোমাকেই আঁকা হয়েছে। তুমি বুদ্ধিমতী। এতক্ষণে নিশ্চয়ই এও বুঝে গেছ, তোমাকে আঁকা হয়েছে কোনো কারণে প্রচণ্ড রেগে থাকা একজন তরুণী হিসেবে। যে তরুণী ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে সোজা হাজির রেল স্টেশনে। কিন্তু গন্তব্য তার গ...
আমার প্রথম বিদেশ ভ্রমণ ছিল ইতালিতে। এইজন্য এই দেশটার প্রতি আমার অন্য রকম দূর্বলতা কাজ করে। তবে ইতালির প্রতি আমার সম্পূর্ণ অন্য একটা কারণে ভয়ংকর ভাল লাগা কাজ করে। একবার আরিজ্জোর কোনো এক গ্রামে আমি গিয়েছিলাম। গ্রামের নামটা সঠিক মনে নেই। সেই গ্রামের এক কবি ছিলেন। তার নাম নাতালিয়া ল্যান্ড্রা। ভীষণ বুড়ি এক মহিলা। খুব সম্ভবত তিনিই পৃথিবীর একমাত্র কবি, যার কোনো কবিতা কোথাও ছাপা হয়নি। গুগলে সার্চ দিয়ে এই কবিকে আপনি পাবেন না। অন্তত আমি পাইনি এখনো। একদিন সেই মহিলা ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে তার কবিতা অনুবাদ করে আমাকে শোনান। কবিতা আমাকে তেমন টানে না। খুবই অনাগ্রহ নিয়ে কবিতা শোনা শুরু করি। তারপর একসময় আবিষ্কার করি, আমার গোটা শরীর কাঁপছে। এত অসামান্য কবিতা মানুষ লিখে কি করে। একটা মলিন ডায়রীতে তার কবিতা লেখা থাকে। তার কোনো গ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি। সেই ডায়রীর পাতাগুলো আমি ফটোকপি করে দেশে নিয়ে আসি। নিখাদ ইতালিয়ান ভাষায় কবিতাগুলো লেখা। আমি পড়ে কিছুই বুঝি না। তবু সেই অবোধ্য কবিতা পড়ে, আমি গভীর আনন্দবোধ করি। এখন গুগুল ট্রান্সলেটরের যুগ। মাঝে মাঝে আমি লেখাগুলো সেই ট্রান্সলেটরে অনুবাদ করি। ভাসা ভাসা আবছা একটা ধা...
আজ আমার মধুসুদন দাদার গল্প বলতে ইচ্ছে করছে। সে অনেক অনেক আগের কথা। এক দেশে ছিল এক হতদরিদ্র মা। তার একটাই ছেলে। ধরা যাক, ছেলেটার নাম গোপাল। গোপালের বয়স ৫ কি ৬। সে গ্রামের পাঠশালায় পড়ে। তার বাড়ি থেকে পাঠশালা অনেক দূরে। পাঠশালায় যেতে হলে একটা নির্জন বনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। ভয়াল বিপদসংকুল সেই বন। গোপাল নিতান্তই বাচ্চা ছেলে। বনের ভেতর দিয়ে পথ চলতে তার ভয় লাগে। মা গোপালকে সাহস দেবার জন্য বললেন, বনের ভেতর কখনো ডরাইস না, গোপাল। তোর একজন দাদা আছে। নাম মধুসুদন। যদি কখনো বনের ভেতর হারাই যাস, ভয় লাগে, তাইলে মধুসুদন দাদার কথা ভাববি। মাথায় রাখবি, মধুসুদন দাদা আছে। কাজেই ভয়ের কোনো কারণ নাই। বুঝলি বাবা? গোপাল মাথা নাড়লো। আসলে মধুসুদন বলে কেউ ছিল না। অসহায় মা তার ছেলের মনে সাহস যোগানোর জন্য বানোয়াট মধুসুদনের গল্প শুনিয়েছিলেন। যাতে তার ছেলে ভয় না পায়। সাহস না হারায়। এরপর থেকে গোপাল মহা আনন্দে পাঠশালায় যায়। তার একটুও ভয় লাগে না। বনের ভেতর মধুসুদন দাদা তো আছেই। বিপদে পড়লে তিনিই এগিয়ে আসবেন। দিনের পর দিন গোপাল নির্ভিক চিত্তে বন বেরিয়ে পাঠশালায় যেতে লাগলো। এর মধ্যে এক কান্ড ঘটলো। পাঠশালায় পিকনিক টাইপের কো...

Happy Download Day 😆

খুলনা জিলা আটটি বছর শুধু গাধার মতো খেটে কাটিয়েছি..জেলখানা জীবনের প্রাত্যহিক আড্ডা বলতে বিকেলে পাশের বাসার ছাদে বসা..আর আড্ডার শিরোমনি ছিল শুভ ভাই..উনি কথা বলতেন আর আমরা হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়তাম.. এক বিকেলে শুভ ভাই, -বুঝলা সাদ, নামাজ পড়া শুরু করা দরকার -তাতো অবশ্যই দরকার -নামাজ পড়লে বেহেস্তে যাওয়া যায় -তাতো অবশ্যই যাওয়া যায় -বেহেস্তে হুর পরী পাইবা -আমি তো ছোট মানুষ, হুর পরী দিয়া কি করব? -আরে ধুর মিয়া,খালি কথার মইধ্যে বা হাত দেও -আচ্ছা আর দিবো না -হুর পরীরা অনেক সুন্দর,অনেক ফর্সা -তাই নাকি? -হু..ওরা এত ফর্সা, এত ফর্সা যে হাড্ডি পর্যন্ত দেখা যায় -বলেন কি? ভয় লাগবে তো -ফর্সা কি বেশি বইলা ফেলসি? -না, বেশি বলেন নাই..চলেন মসজিদে যাই বেশ কয়েকদিন শুভ ভাইয়ের খোজ নাই..একদিন হুট করে হাজির.. -কি ব্যাপার ভাই, কই ছিলেন আপনি? -আর বইলো না, বিয়া কইরা ফেলসি -বলেন কি? কবে? কাকে? ভাবি কই? -ভাইগা বিয়া করছি, মেয়ে বরিশালের -খুব ভালো করছেন..তো ভাবি কই? -গ্যাছে গা.. -গ্যাছে গা মানে? -হ..বিয়া কইরা বাসায় আসতে আসতে রাত বাজছে একটা, দুইটা পর্যন্ত দরজা ধাক্কাইলাম, বাড়িওয়ালা দরজা খোলে না -তারপর, তারপর? -তারপর আর কি, ব...
"Good education, Bad reputation" Your school doesn’t make you who you are “Kon school e jao baba?” It all starts with that question, doesn’t it? It’s that defining moment of your life, when this aunty or that uncle decides whether you’re cultured or uncultured. Unfortunately, I happen to go to one of the “rich kid” schools where all the teachers are bideshi. The words race across her in bold, like she’s a high definition LED television screen: Uncultured Ill-mannered Beyadop Indecent. And there you have it, the complete list of who we are. The common assumption is that because you go to one of these schools you’re simply taught how to be white. You’re put into a whitewash machine and you come out exactly the same as everyone else — paint job and all complete. There’s no way to set you back to factory settings. Cultured and uncultured kids In this society, year after year, unique girls are stuffed into the same dated mould, where they are raised to be trophies, where if they...

ভালবাসার কেউ একজন

তুমি আমার "কেউ একজন" আর আমি তোমার । তুমি রবী ঠাকুরের সেই নিরুপমা, তুমি কবি নজরুলের সেই চন্দ্রমা, হয়তো বা হুমায়েন স্যারের কল্পনা, অথবা ন. মিত্র সাহেবের অনামিকা। আমি সঠিক করে বলতে পারবো না। কিন্তু আমি একটা কথা নিষসন্ধেহে বলতে পারবো তুমি অনন্যা। কেউ তোমার মত না। "তুমি সুন্দর্যের সুন্দর্য,    তুমি অপূর্বতার অপূর্ব। তুমি কারো চোখের স্নিগ্ধতা,     তুমি কারো মনের পূর্ণতা। তুমি আমার মনের সম্পূর্ণতা,    তুমি আমার মনের সেই অপূর্ণ অংশটা।" তুমি আমার কেউ না বলেই, তোমাকে দেখার পর থেকে আমার যে বুক  আর কম্পিত হয় না। কম্পন ছেড়ে সে কথা বলা শুরু করেছে। আমার বুকটি  শুধু এতোটুকুই বলে তুমি যে আমার শুধুই আমার। তোমাকে দেখার পর আমার চোখ বলেছে সুন্দরীতো তোমার থেকেও অনেক দেখেছি কিন্তু কারো মধ্যে তোমার মতো অমাহিক সন্দর্যের আর কাউকে দেখিনী। কমল ও সামান্য রুক্ষ্য তোমার হাততো আমি স্পর্স করিনি। কিন্তু ঐ হাত ধরতে চাই। চাই, ঐ হাতটা এতো কমলতার সাথে ধরতে যেমনটা করে কেউ এই মাত্র জন্মকৃত নবশিশুর হাতটা ধরে। আর সাথে সাথে এতো শক্ত করে ধরতে চাই যেন ঐহাতটা আমার থেকে কখনই ছুটে না...
এই ভর দুপুরে একজন আমাকে মুখের উপর ব্লক করে দিলেন। তিনি একটা জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসের বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী। ঢাকার রাস্তার জলাবদ্ধতা। তার ভাষ্য, আমরা পলিথিন রাস্তায় ফেলি বলেই আজকে এই দশা। আমাদের লজ্জা হওয়া উচিত। নিউইয়র্ক, লন্ডন, টোকিও'র মেয়ররাও এই শহরের কিছু করতে পারবে না। আমাদের উচিত মেয়রদ্বয়ের প্রতি আস্থা রাখা, সময়মতো পৌরকর পরিশোধ করা এবং উন্নয়নের জয়যাত্রায় সামিল হওয়া। দুই ঘন্টায় বিশ হাজার লাইক। আমি তাকে ইনবক্সে প্রশ্ন করলাম, ভাইয়া ব্যস্ত? - আরে কিসের ব্যস্ত। আমি তো জনগণের জন্যই। বলুন কি করতে পারি আপনার জন্য। আমি হালকার উপর বাড়ি মেরে বললাম, নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন নাকি? উনি দরাজ গলায় বললেন, আমার তো ইচ্ছে নেই রে ভাই। এলাকার মানুষের দাবী। ভালোবাসার দাবী তো আর ফেলা যায় না। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন নেত্রী। দোয়া রাইখেন। দোয়াটাই আসল। - জ্বী ভাইয়া। অবশ্যই দোয়া করবো। আপনার কথা শুনে কান্না পাচ্ছে। কান্নাকাটিতে যদি এক ইঞ্চি পানি বেড়ে যায়, এই ভয়ে কাঁদছি না। যে জলাবদ্ধতা চারিদিকে। উনি সতর্ক হয়ে উত্তর দিলেন, আপনি কি আমার সাথে ফাজলামি করছেন? রসিকতা বাদ দিয়ে যা বলার দ্রুত ...
মেয়েটা ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে পাগলের মত কাঁদছে। উষ্কখুষ্ক চুলে তাকে এই মূহুর্তে মানসিক বিকারগ্রস্ত রোগীর মত লাগছে। নিঃশ্বাস নিতে প্রচন্ড কষ্ট হওয়ায় তার গলা দিয়ে একটু পর পর অদ্ভূত একটা আওয়াজ হচ্ছে। যে কেউ তার কান্না শুনলে ভাববে, সে একটু পর দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে। যে মানুষটার জন্য সে কাঁদছে, সে এই মূহুর্তে অত্যন্ত নির্লিপ্তভাবে বসে আছে। মানুষটার চোখেমুখে কোন ধরণের মায়াদয়ার ছাপ নেই। মনে হচ্ছে, সে কিছুটা বিরক্তও বটে। পশুপাখির কান্না শুনলেও মানুষের কষ্ট হওয়া উচিত, অথচ জলজ্যান্ত একটা মানুষের কান্না শুনে তার কোন কষ্ট হচ্ছে না। আচ্ছা, আসলে সে কি মানুষ ?? চারপাশের সবার মতে, সে আসলে কোন মানুষ না। সে একটা জানোয়ার। জানোয়ার ছাড়া অতটা নিষ্ঠুর, অতটা নির্দয়, অতটা পাথর কেউ হতে পারে না। পুরো পৃথিবীর মানুষ কে জিজ্ঞেস করলে তারা এক বাক্যে বলবে, এই অমানবিক নিষ্ঠুর জানোয়ারটাকে খুন করে ফেলা উচিত !! পৃথিবীর মানুষগুলো জানে না, এই জানোয়ারটাও এক সময় মানুষ ছিলো। তীব্র আবেগ নিয়ে সেও একসময় কাঁদতে জানতো। কেউ একজন খুব যত্ন করে আবেগের দোহাই দিয়ে তার গলার ভেতর দিয়ে বিশাল একটা পাথর ঢুকিয়ে দিয়েছিলো। সেই পাথরটা তার গলায় গিয়ে...
"সুন্দরী, তুমি আমার গরুর ভুনা ... তুমি আমার খাসীর রেজালা !! আর ঐ যে বদখত রকমের ছেলেটা, যে তোমার প্রেমিক... সে একটা আস্ত গোল মরিচ !! গরুর ভূনা আর খাসীর রেজালা'র মাঝে গোল মরিচ এর উপস্থিতি বড্ড অস্বস্তি দেয় ... বড্ড যন্ত্রণা দেয় !!"
একটা ছোট্টো গল্প বলি। সময়টা এসএসসি'র ইকটু পরে সবাই যখন পরীক্ষা শেষ হওয়ার আনন্দে ব্যস্ত তখন আমি এসএসসি'র সব বই বার বার করে মুখস্ত করছি কারেন্ট এফেয়ার্স এর মাসিক বইগুলো মুখস্ত করাই ব্যস্ত। কারণ নটের ডেম কলেজ। এই সব করতে করতে পরীক্ষার ফলাফল দিলো আশা অনুযায়ী ভালো হলো না তবুও ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার দৃঢ় প্রতিঙ্গা বদ্ধ হয়ে জীবনের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছি । এই বিষয়ে বাসায় কেউকিচ্ছু জানে না। মায়ের মন তো মায়ের মন সে ঠিকই টের পেয়ে গেলো। আমি ঢাকার কোনো কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তার বুঝতে বাকি থাকলো না আমি ঢাকায় চলে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করছি। মায়ের বেকুল মন আরও বেকুল হয়ে উঠলো। মা ডাইবেটিক পেসেন্ট দিনে দুইবার ইনসুলিন নিতে হয়। সূর্য একদিন না উঠে থাকতে পারে  কিন্তু আমার ইনসুলিন ছাড়া থাকতে পারে না। মিস করলেই তার যায় যায় অবস্থা হয়। পরীক্ষার ঠিক এক সপ্তাহ আগে আমার মানিব্যাগ হারিয়ে গেলো মানিব্যাগ হারিয়ে আমি অথোই জলে পড়লাম সেখানে আমার ব্যাংক এর কার্ড কিছুদিন আগে ব্যাংক বের করা কিছু নগদ টাকা আর তার থেকে বড় কথা আমার বাসের টিকিট ছিলো। দিনযতো আগাতে থাকলে মা ততোই নিস্বপ্রাণ হতে থাকলো। আম...
আমি বরাবরই একজন রাবীন্দ্রিক প্রেমিকা চেয়েছিলাম— দুঃসহ দুঃসময়েও যে গাইতে পারে; লিখতে না পারুক, অন্তত লেখাতে পারে; নাচতে না পারুক, অন্তত নাচাতে পারে! পরনে ধানি-রঙা শাড়ি, হাতে হলদে সবুজ চুড়ি, কেশদানিতে বেনামি ফুল, কর্ণলতিকায় কাঠগোলাপ পরে চোখাচোখি দাঁড়িয়ে নাকফুলের বেড়াজাল ডিঙিয়ে কাব্যিক কমান্ডারের ঢঙে যে হুকুম করতে পারে— কী লিখেছ আমায় নিয়ে, তোমায় নিয়ে, আমাদের নিয়ে? সমর্পণ করো! আর আমি? নকশাদার সফেদ পাঞ্জাবির ভেতর থেকে দুই হাত উপরে তুলতে-তুলতে ফুল ও চুলের ঝলকানিতে দুই চোখ ক্রমশ বন্ধ করতে-করতে পরিপূর্ণ বেসামরিক ভঙ্গিতে আমি বলতাম— এই নাও সাবালিকা, আপাদমস্তক আমিই আজ আত্মসমর্পণ করলাম!
মেয়ে মডেলগুলারে দেখতে দেখতে জীবনটা তামাতামা হয়েগেল .... ব্যাচেলারদের সবচেয়ে বেশী অশান্তির কারন এই মডেলরা .... অনেক আগে কথা, আম্মু আমার বিয়ের জন্য একটা মেয়ে পছন্দ করলো .... সেই মেয়েকে নিয়ে আমার বাসার ডাইনিং রুমে মিটিং শুরু হলো ..... চাচা-চাচী, ফুপা-ফুপু সবাই ছিল, আমিও ছিলাম সেখানে .... সামনে টিভি .... নাটক চলছে .... হঠাৎ নাটকের বিরতিতে টিভিতে এড শুরু হলো .... তেলের এড .... মডেল মেয়েটার চুল কোমড় পর্যন্ত .... ঘন কুচকুচে কালো চুল .... বাসার সবার চোখ সেই চুলে যেয়ে আটকে গেল .... আমার বিয়েটা সাথেই সাথেই ভেঙ্গে গেল .... কারন আম্মু যেই মেয়েটাকে পছন্দ করেছে, সেই মেয়ের মাথায় নাকি চুল কম .... এভাবে আরেকটা মেয়েকে পছন্দ করলো আম্মু .... মেয়েটা দেখতে ভীষন কিউট ..... এ যুগের ভাষায় যাকে আমরা বলি, কিউটের ডিব্বা .... এই মেয়েটার চুল কোমড় ছাড়িয়ে হাঁটুতে যেয়ে প্যাঁচ মেরেছে তবে একটু গুতুমগাতুম .... একইভাবে একই স্থানে আবার মিটিং ডাকা হলো .... সামনে টিভি .... রান্নার অনুষ্ঠান চলছে .... অতিথি মডেল .... মডেল বাঁশের কন্চি .... সেই বিয়েটাও ভেঙ্গে গেল .... এই মেয়ে মোটা, বিয়ের পর নাকি খুব দ্রুত খালাম্মা হয়ে যাবে ......
"The Salty Coffee" He met her at a party. She was so outstanding, many guys chasing after her, while he was so normal, nobody paid attention to him. At the end of the party, he invited her to have coffee with him, she was surprised but due to being polite, she promised. They sat in a nice coffee shop, he was too nervous to say anything, she felt uncomfortable, and she thought to herself, "Please, let me go home..." Suddenly he asked the waiter, "Would you please give me some salt? I'd like to put it in my coffee." Everybody stared at him, so strange! His face turned red but still, he put the salt in his coffee and drank it. She asked him curiously, "Why you have this hobby?" He replied, "When I was a little boy, I lived near the sea, I liked playing in the sea, I could feel the taste of the sea, just like the taste of the salty coffee. Now every time I have the salty coffee, I always think of my childhood, think of my hometown, I miss m...
ঘরটা অনেক বড়। মশার কয়েল ঘরের কোণে রাখার নিয়ম। কিন্তু সন্ধ্যা বেলায় মশার কয়েলটা জ্বালিয়ে ঠিক নিজের পায়ের কাছে এনে রাখলেন বাবা। এরপর বেশ যত্ন করে খবরের কাগজ মেলে ধরলেন। তার আগ্রহ দেখে কে বলবে, এটা দুই দিনের বাসি খবরের কাগজ। অফিস থেকে না বলে নিয়ে আসা। মশার কয়েল পুড়ছে। আর তিনি এমন অখন্ড মনোযোগের সাথে পড়ছেন, মনে হচ্ছে, কাগজটা একটু আগেই বের হয়েছে। এতে অতীতের খবর তো বটেই এমনকি ভবিষ্যতের কিছু এক্সক্লুসিভ খবর দেয়া আছে। যেটা এক্ষুণি পড়ে না ফেলতে পারলে মহাসর্বনাশ হয়ে যাবে। আমরা দুই ভাই মেঝেতে মাদুর বিছিয়ে পড়তে বসেছি। দুইজন তাল মিলিয়ে বেশ জোরে জোরে পড়ছি, ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। ঢাকা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। জোরে পড়ার উদ্দেশ্য পরিষ্কার। বাবা এবং পাড়াপ্রতিবেশী সবাই যাতে বোঝে, আমরা লেখাপড়ার ব্যাপারে অত্যন্ত সিরিয়াস। আমাদের পড়ার শব্দে বাবা খানিকটা বিরক্ত হলেন। খবরের কাগজ থেকে মুখ তুলে বললেন, বলতো ঢাকা কোথায়? আমরা থতমত খেয়ে গেলাম। এটা তো বইতে লেখা নেই। কি মুসিবত। বাবা ক্ষেপে উঠলেন, গাধার দল। এতক্ষণ কি পড়ছিস। ঢাকা বুড়িগঙ্গার পাশে। পড়া যদি মাথায়...
বাংলা ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছিলেন, আমার ইচ্ছে করে তাদের মতো হই। যেমন রফিক, সালাম, বরকত। কিন্তু আমার যে এত সাহস নেই। ভাষার জন্য পুলিশের গুলিতে নিজের জান দিয়ে দেবো? আমার ভয় করে। আর তাছাড়া এখন তো আর সেই দিন নেই যে, ''রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই '' -বলে মিছিল করতে হবে। আমাদের রাষ্ট্র ভাষা তো বাংলাই। এই রফিক, সালাম , বরকতরা তো এটাই বাস্তবায়ন করেই গেছে। তাহলে আমি কি করবো? একটা কাজ আমি করতে পারি। সাদা পাঞ্জাবি পড়ে , খালি পায়ে শহীদ মিনারে ফুল নিয়ে যেতে পারি। মিছিলে দাঁড়িয়ে এইসব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারি। কিন্তু এইটুকু করলেই কি আমি ভাষা সৈনিকদের সমান হতে পারবো? সারা বছরে মাত্র একটি দিন, তাও সেটা সরকারি ছুটির দিন। সেই দিনে সেজেগুজে শহীদ মিনারে গেলেই কি আমার সব দায়িত্ব শেষ? ব্যাপারটি কি এত সহজ? আমার তা মনে হয় না। এরচেয়ে যদি আমি একটা কাজ করি? বাংলা ভাষায় ইন্টারনেটে লিখি। কবিতা, গান, গদ্য। কিন্তু আমি যে সুন্দর কবিতা বা গান লিখতে পারি না। ঠিক আছে। কোনো সমস্যা নেই। আমি বরং লিখে সার্চ দেই। গোলাপ নিয়ে গুগলে অনেক লেখা আসবে। আমি বেছে গোলাপ সংক্রান্ত সবচেয়ে সেরা লেখাটি অনুবাদ ...
ছোট বেলা থেকেই আমার স্বপ্ন, বাড়ি থেকে পালাবো। কোনো একটা  মায়াবতী  মেয়ের হাত ধরে, দু চোখ  যেদিকে  যায়, চলে যাবো। গাছের তলায় সংসার  পাতবো ।   লাঞ্চের  পর বেশ ঘুম পায়।  এসময়  সিগারেট খেতে নিচে নামি। অফিসের নিচেই চায়ের দোকান। ওখানে বসে  ঘন্টাখানেক  আড্ডা  মারি । আমার সাথে থাকেন  ফারহান   ফুয়াদ । এ সময় তারও ঘুম পায়। তিনিও চা পান করতে চায়ের দোকানে আসেন। আমাদের দুজনের সব মিলিয়ে জনা  দশেক  ভক্ত আছেন। তাদের মধ্যে আট জনই নারী। ঠিক এই  সময়টাতে  তারা আমাদের সাথে দেখা করতে আসেন।   আমরা দুজন নানা রকম চমক লাগানো কথা বলে, সেই সব  নারীকুলদের  মুগ্ধ করার চেষ্টা করি। আমার ধারণা ছিল, অল্প বয়সী মেয়েরা বেশ  আবেগপ্রবণ  হয়। দেখা গেল, ব্যাপারটা ঠিক না।   কোনো একটা মেয়েকে খুবই আগ্রহ নিয়ে গল্প বলছি। কচ্ছপের গল্প। একটা কচ্ছপ কত তুচ্ছ প্রাণী। অথচ সে  বাঁচে   আড়াইশো  বছর। কিন্তু মানুষের  মতো  মহান একটি জীবের আয়ু খুবই অল্প, মাত্র ৫০/৬০ বছর। কোনো মানে হয়? কাজেই...