পর্ব: ১৩

যে ভয়টা পাচ্ছিলাম ঠিক সেটাই হল..দৌড়াতে দৌড়াতে সৌমিন হোচট খেয়ে পরে গেল এক মেয়ের গায়ের উপর..মেয়েটা কলেজ থেকে ফিরছিল..আর যায় কোথায়..মুহুর্তেই ভীড় জমে গেল সৌমিন ফিদা আর ব্যাথায় কাতরাতে থাকা মেয়েটাকে ঘিরে.. 
পাবলিক এই মারে তো সেই মারে অবস্থা..মেয়েটা যত জোরে কাতরায় পাবলিকের হুমকি ধামকি তত বাড়ে..আমিও ভীড়ের মধ্যে দাড়িয়ে গাধা দুটোকে বাচানোর প্ল্যান করছি..কিন্তু কোন উপায় খুজে পাচ্ছি না.. 
এর মধ্যেই দাড়িয়ে গেল নেতা গোছের একজন..ছোট খাটো দেহের এক লোক, দেখলেই বুঝা যায় ধান্দাবাজ..নাম জানলাম রবি ভাই.. 
রবি ভাই: আপনারা কাজটা কি করলেন? দিছেন তো মেয়েটার হাত পা ভেংগে 
সৌমিন: ভাই আমরা বুঝি নাই, আমরা ঢাকা থেকে এসেছি 
রবি ভাই: আপনারা ঢাকা থেকে আসেন না দুবাই থেকে আসেন সেইটা দিয়া কি করব? এই মেয়ের এখন কি হবে? এই হাত পা ভাংগা মেয়ের চিকিৎসা এখন কে করবে? 
ফিদা: ভাই, একটু দেখেন না আসলেই ভাংসে কিনা 
রবি ভাই: অবশ্যই ভাংছে, বাচ্চা একটা মেয়ের উপর এই রকম একটা হাতি পড়বে, আর তার হাত পা ভাংবে না? অবশ্যই ভাংছে, কি ভাই, ভাংছে না? 
সমবেত জনগন সমস্বরে "হ ভাংছে ভাংছে" বলে চিৎকার করতে লাগল 
রবি ভাই: এই পংগু মেয়ের ভবিষ্যৎ কি? কে বিয়ে করবে এরে? 
সৌমিন: ভাই, আমরা তো মোটে ছাত্র, বিয়ের বয়স হয় নি, আব্বাও রাজি হবে না 
রবি ভাই: তুই চুপ কর হাতি, তোর কাছে কে মেয়ে বিয়া দিবে? কি ভাই, এর কাছে কেউ মেয়ে বিয়া দিবে? 
"না না হাতির কাছে মেয়ে বিয়া দিবে না" 
রবি ভাই: যা হইছে হইছে, দেন ১০০০ টাকা, মেয়েরে হাসপাতালে পাঠাতে হবে 
ফিদা: এত টাকা কই পাব? 
রবি ভাই: কই পাবেন ক্যামনে বলব, টাকা ছাড়া ছাড়ন নাই, এই পংগু মেয়ের বিয়ার খরচ তো আর চাই নাই 
এভাবেই চলল বেশ কতক্ষন, শেষে ৩০০ টাকায় রফা হল..ফিদা পকেট কেচে টাকাটা বাড়িয়ে দিল রবি ভাইয়ের দিকে..এর মধ্যে চোখ গেল মেয়েটার দিকে.. 
কিন্তু কোথায় মেয়ে? সবাই যখন ব্যস্ত বিচার নিয়ে, কেউ খেয়ালও করেনি যে মেয়েটা এর মধ্যেই উঠে হেটে হেটে বাড়ি চলে গেছে.. 

Comments

Popular posts from this blog

দুঃখ করো না, বাঁচো !

এক টুকরো আকাশ !