পর্ব: ০৬
গাবতলির হোটেলটা খুব একটা খারাপ না..ম্যালামাইনের প্লেটগুলোর রং পাল্টে গেলেও সাদা ভাত, বিফ ভুনা আর ডাল দিয়ে রাতের খাওয়া সারতে তেমন একটা প্রবলেম হচ্ছে না..
হোটেলে গেলে ফিদা একটা চালাকি করে..ওয়েটারের হাতে অল্প কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে একটা চোখ টিপে দিলেই কাজ হয়ে যায়..ওয়েটার থোড়া বলে বলে দুই তিন প্লেট এক্সট্রা তরকারি দিয়ে যায়..বিল হয় এক প্লেটের..চানখারপুলের হোটেল গুলোর ওয়েটারদের অভ্যাস খারাপ করে দিয়েছে ফিদা..তবে ওর সাথে খেতে যাওয়ার মধ্যে মজাও আছে..
বিল দিতে গিয়ে ফিদার গলায় গুয়ামুরি আটকে গেল..হারামি ওয়েটার ব্যাটা টিপস ও নিলো আবার ৬ প্লেট বিফ ভুনার বিলও দিল..এখন কাউন্টারের পাশে দাড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসছেও..
বিল দিয়ে হোটেল থেকে বের হতে হতে ফিদা দ্বীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
-বুঝলি, এই দেশে অনেস্টি বলে কিছু নাই, চারপাশে অসৎ লোকে ভরে গেছে..
রাতের খাবারে বেশ কিছু টাকা বেরিয়ে গেলো..তার মধ্যে সৌমিনের হাতের মিনারেল ওয়াটারের পানির বোতলটার দিকে যতবারই চোখ যায়, ততবারই মেজাজ খিচরে যাচ্ছে..ব্যাটা এই আকালের দিনেও মিনারেল ওয়াটার খায়..
রাতও হয়েছে অনেক, গাবতলি বাস টার্মিনালটা যেন হঠাৎ করেই ফাকা হয়ে গেল..থেমে থাকা বাসগুলো যে আর কোথাও যাচ্ছে না, সেটা আগে থেকে কে জানত?
হলে ফিরে যাব, তারও কোন উপায় নেই..ঘোষনা দিয়ে নিরুদ্দেশ হতে গিয়ে ফিরে যাওয়া সম্ভব না..আর তাছাড়া আমার রুমমেট জুয়েল ভাই নিশ্চই তার নতুন কেনা স্প্যানিশ গিটারটার জন্য পুরা হল তোলপার করে ফেলেছেন..উনাকে বিশ্বাস নাই, দলবল নিয়ে গাবতলির দিকেই রওনা দিয়েছেন কিনা কে জানে..
যে করে হোক নিরুদ্দেশ হতেই হবে..দরকার হলে ট্রাকে করেই চলে যাব..
দ্রুত পায়ে ট্রাক স্ট্যান্ডের দিকে হাটা দিলাম..পিঠে থাকা স্প্যানিশ গিটারটা এত ভারী লাগছে কেন এখন?
Comments
Post a Comment