পর্ব: ০৭
সৌমিন: তোরা ড্রাইভার সাহেবরে একটু বলবি উনার দুধ পুড়ে যাচ্ছে..
ফিদা: তুই এই রাতে দুধ পাইলি কই?
সৌমিন: তোরা কি নাকে ঠসা? পোড়া দুধের গন্ধ পাস না?
ফিদা: আরে বেকুব, এইটা গাজার গন্ধ, আমাদের ট্রাকের ড্রাইভার সাহেব গাজা খাইতেছে..
সৌমিন: বলিস কি? আমাদের কি নেমে যাওয়া উচিত?
ফিদা: না, আমাদের উচিত উনার কাছ থেকে গাজা নিয়ে দুইটা করে টান দিয়ে মটকা মেরে পরে থাকা
সৌমিন: তুই খা, খেয়ে মরে যা, আমরা তোর যন্ত্রনা থেকে বাচি
ফিদা ট্রাকের পেছন থেকেই "ড্রাইভার সাহেব, ড্রাইভার সাহেব, আপনার দুধ নাকি পুড়ে" বলে চিৎকার করতে লাগল..
ফিদা হিলি যেতে চেয়েছিল, হিলিতে নাকি পাহাড় আছে..ফিদার সাফ কথা, কোন কারন ছাড়া জায়গার নাম হিলি হবে কেন? আমি ওর দেশের বাড়ি যে ছাগলনাইয়া, সেটা মনে করিয়ে দেয়াতে কথা আর বেশি আগায়নি..
গাবতলি ট্রাক স্ট্যান্ডের কোন ট্রাকই আজ কোথাও যাবে না..শেষে বহু কষ্ট করে হাতে পায়ে ধরে ড্রাইভার সাহেবকে রাজি করিয়েছি..ট্রাক চিটাগাং থেকে ইশ্বরদী যাচ্ছে..৩ জনকে ৩০০ টাকা দিতে হবে ইশ্বরদী যাওয়ার জন্য..তবে ট্রাকের পিছনে বসে যেতে হবে..কোন ভাবেই উনি রাজি হননি তার পাশে বসিয়ে নিতে..ড্রাইভারের সাফ কথা "আপনাগো আমার ডাউট লাগে, মোডা গাডা ডারে তো দ্যাখতে ডাকাইতের মতন লাগে"..
এত অপমানের পরও চড়ে বসলাম ট্রাকের পেছনে..ট্রাকের পেছনের পুরোটাই খালি..শুধু একপাশে দড়ি দিয়ে বাধা একটা খাট..অন্ধকারে ভাল বোঝাও যাচ্ছে না..বুঝেই বা কি করার আছে?
ট্রাক ছাড়ার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে বুঝলাম এই শীতের রাতে খোলা ট্রাকে চড়ে নিরুদ্দেশ হওয়াটা বেকুবি ছাড়া আর কিছু না..একবার মনে হল ট্রাক থেকে নেমে যাই..
একটু পরেই সৌমিনের মোবাইলে আসলো টিটুর ৪ লাইনের একটা এসএমএস,
"রিয়াজ, সৌমিন, ফিদা, যত দুরে পারিস পালায় যা, জুয়েল ভাই গাড়ি নিয়া তোদের খুজতে বের হইছে, গাড়িতে গাল কাটা বিল্লাল আর ডগ বাবুও আছে"
এই পৌষ মাসের শীতেও কেমন যেন গরম লাগা শুরু হল..
Comments
Post a Comment